প্রতীকী ছবি।
নিজেদের বিবাদের জেরে কখনও দুই প্রোমোটারের মধ্যে প্রকাশ্যে গুলি বিনিময়। কখনও বাড়ি ভাঙাকে কেন্দ্র করে খোদ শাসক দলের সাংসদের বাড়ির সামনে সিন্ডিকেটের দুই গোষ্ঠীর তুমুল সংঘর্ষ। কখনও আবার ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তুলে অপহরণ। শহর কলকাতায় অপরাধমূলক ঘটনার যেন বিরাম নেই। এরই মধ্যে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে বেপরোয়া গুন্ডাগিরির এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান থানার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরোলেও অভিযুক্তকে তারা গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের দাবি, তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রের খবর, গন্ডগোলের সূত্রপাত গাড়ির পার্কিং ও ময়লা ফেলাকে কেন্দ্র করে। পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে একটি আবাসনের নীচে মনোজ সিংহ নামে এক ব্যবসায়ীর কম্পিউটারের দোকান রয়েছে। ওই আবাসনেরই পাঁচতলায় থাকেন এক যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, মনোজ ওই আবাসনের ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক। দিনদুয়েক আগে তাঁর অনুমতি নিয়েই সাফাইকর্মীরা দোকানের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় কিছু ময়লা ফেলেছিলেন। মনোজের কাকা শ্রীরাম সিংহের অভিযোগ, ‘‘পার্কিং লটে ময়লা ফেলা নিয়ে দিনদুয়েক আগে ওই যুবকের সঙ্গে আমার ভাইপোর কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তখনকার মতো ঝামেলা মিটেও গিয়েছিল। কিন্তু ওই ছেলেটি নিজের প্রভাব দেখাতে বৃহস্পতিবার রাতে আমার ভাইপোকে বেধড়ক মারধর করে। পুলিশ ওর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ওই পার্কিং লটে অভিযুক্ত যুবকেরও গাড়ি থাকে। সেখানে ময়লা কেন ফেলা হবে, তা নিয়েই বিবাদের সূত্রপাত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ মনোজ তাঁর দোকানেই ছিলেন। শ্রীরামের অভিযোগ, ‘‘আমি সেই সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলাম না। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পরিষ্কার দেখা গিয়েছে, ওই যুবক হঠাৎই কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে এসে রড, লাঠি,
হেলমেট নিয়ে মনোজকে ব্যাপক মারধর শুরু করে। মারের চোটে মনোজের মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত বেরোতে থাকে। কয়েক মিনিট ধরে মারধর করার পরে ওই যুবক ও তার সঙ্গীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।’’ এর পরে অচৈতন্য অবস্থায় মনোজকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মনোজের কাকার অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে জোড়াবাগান থানায় গেলে পুলিশ প্রথমে এফআইআর নিতেই অস্বীকার করে। পরে শুক্রবার সকালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ঘটনার কথা প্রচারিত হওয়ায় বেলার দিকে অভিযোগ নেওয়া হয়।’’ যদিও পুলিশ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তবে কি স্রেফ পার্কিং ও ময়লা ফেলা নিয়েই দু’জনের মধ্যে বচসা? না কি এই ঘটনার পিছনে দু’জনের মধ্যে অন্য কোনও পুরনো শত্রুতা রয়েছে? এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে জোড়াবাগান থানার পুলিশ। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’’