ছাত্রীর চিঠি পেয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। ফাইল ছবি
সম্পর্কের টানে ঘর ছেড়েছিল নাবালিকা। উদ্ধারের পরে ঠাঁই হয় হোমে। অভিযোগ, হোম থেকে বাড়ি ফেরার পরে স্কুলে গেলে তাকে জানানো হয়, স্কুলে আসতে হবে না। পড়াশোনা চলুক বাড়িতে বসেই। সম্প্রতি এ নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে দক্ষিণ কলকাতার সোনারপুর এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী। নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী যাতে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েই চিঠি লিখেছে সে।
ছাত্রীর চিঠি পেয়ে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দাবি, নিরাপত্তার খাতিরেই কয়েক দিন স্কুলে আসতে নিষেধ করা হয়েছিল মেয়েটিকে।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি সূত্রের খবর, কয়েক মাস আগে প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছাড়ে মেয়েটি। পরে তাকে উদ্ধার করে একটি হোমে এনে রাখা হয়। ছাত্রীর দাবি, ‘‘২২ দিন হোমে ছিলাম। সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে স্কুলে যাই। কিন্তু আমাকে স্কুলে যেতে বারণ করা হয়।’’ এর বেশ কিছু দিন পরে ফের স্কুলে গিয়েছিল সে। তার দাবি, ‘‘তখন আমাকে বলা হয়, পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে। কিন্তু স্কুলে আসা চলবে না। পড়াশোনা করতে হবে বাড়িতেই। স্কুল বলেছে, পরীক্ষায় ভাল ফল হলে তবেই স্কুলে যেতে দেবে। আমি পরীক্ষা দিয়েছি।’’ সেই সঙ্গে ওই ছাত্রী প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘আমি একটা ভুল করেছিলাম। কিন্তু সে জন্য এত বড় শাস্তি পেতে হবে?’’
ছাত্রীর বাবা জানাচ্ছেন, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। গৃহশিক্ষক রাখার মতো আর্থিক ক্ষমতা তাঁর নেই। তাই মেয়ে স্কুলে যেতে না পারলে তার ভবিষ্যৎটাই নষ্ট হয়ে যাবে। সেই কারণেই চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছে ওই নাবালিকা। চিঠিতে সে লিখেছে— ‘আমি হোমে ছিলাম। এখন বাড়িতেই থাকি। স্কুলে যেতে চাই।’
যদিও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ‘‘মেয়েটিকে বলা হয়েছিল, ও যেন অভিভাবককে নিয়ে স্কুলে আসে। কিন্তু অভিভাবক আসেননি। মেয়েটিকে নিয়ে থানা-পুলিশ হয়েছে। তাই আসার পথে ওর নিরাপত্তার কথা ভেবেই আপাতত ওই পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, ওই ছাত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করেছে। তাকে স্কুলে আসতে বলা হয়েছে। স্কুলে আসায় মেয়েটির কোনও বাধা নেই।
তবে জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন অনিন্দিতা বন্দ্যোপাধ্যায় টামটা বলেন, ‘‘অভিযোগ সত্যি হলে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কোনও ছাত্র বা ছাত্রী ভুল করলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তা শুধরে দেবেন, এটাই কাম্য। মেয়েটিকে স্কুলে ফেরানোর প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’