মহম্মদ জ়ুবের। — ফাইল চিত্র।
হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ছবির মজাদার সংলাপ ‘হনুমান হোটেল’ এবং ‘হানিমুন হোটেল’ নিয়ে একটি মিম ২০১৯ সালে শেয়ার করেছিলেন মহম্মদ জ়ুবের। শুধু এর জন্য বিদ্বেষ এবং উস্কানিমূলক প্ররোচনার অভিযোগে তিহাড় জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। মাসখানেক বাদে গত জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে জামিন পান তিনি। রবিবার কলকাতার মহাজাতি সদনে একটি অনুষ্ঠানে তাঁর বন্দিদশার অভিজ্ঞতা বলছিলেন জ়ুবের।
সমাজমাধ্যম বা অন্যত্র ভুয়ো খবর যাচাই করার একটি সংস্থা অল্ট নিউজ-এর দুই প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিংহ এবং জ়ুবের এ দিন ফ্যাসিবাদবিরোধী একটি চলচ্চিত্র উৎসবের ফাঁকে কিছু কথা বলছিলেন। প্রতীক বলেন, “পুলিশ কিন্তু এক বারও জ়ুবেরের কাছে জানতে চায়নি, সে কেন ওই মিম শেয়ার করেছে?বদলে অল্ট নিউজের টাকাকড়ির উৎস নিয়ে জানতে চায়।” জ়ুবের বলেন, “আমায় বার বার জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল অল্ট নিউজে ক’জন কাজ করেন? মুসলিম ক’জন? ১৪-১৫ জন কর্মীর মধ্যে মুসলমান বড়জোর ৪-৫ জন শুনে পুলিশ অবাক হয়।’’
আদতে আমদাবাদের ছেলে প্রতীক, জ়ুবের বেঙ্গালুরুর। সাম্প্রদায়িক এবং বিদ্বেষমূলক খবরের মোকাবিলার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্ভাব্য তালিকায় তাঁদের নাম উঠে আসে। ফ্যাসিবাদ কী ভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা ছেয়ে ফেলেতার ব্যাখ্যা করে প্রতীক জানান, ভারতে ধারাবাহিক ভাবে মুসলিম বিদ্বেষের বয়ান প্রচারই শাসকের ধ্যানজ্ঞান হয়ে উঠেছে। জ়ুবেরের কথায়, “আমার বিরুদ্ধেউত্তরপ্রদেশে বিশেষ তদন্তকারীদল গড়ে গুরুতর ধারায় মামলা সাজানোর চেষ্টা চলছিল। কিন্তুসুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়ে যাই। আমি কার সঙ্গে কথা বলি, কী বই পড়ি— সে সবে কড়া নজর রাখাহচ্ছিল। এক বার সুভাষচন্দ্র বসুর একটি বই পড়ছিলাম। জেলের কর্তারা সেটি ভুল করে সাভারকরের বই ভাবেন!”
প্রতীকের মতে, “দেশে বিদ্বেষমূলক মতাদর্শ রুখতে সব বিষয়ে ওয়াকিবহাল জনতা দরকার। সেই সঙ্গে সহমর্মিতাও জরুরি।” একই মঞ্চে শ্রমিকআন্দোলনের দীর্ঘদিনের দুই কর্মী কুশল দেবনাথ এবং আশিসকুসুম ঘোষও উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি-আরএসএস বিরোধী নাগরিক মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক কুশল দেবনাথ বলেন, “কৃষক আন্দোলনেরমতো নানা গণ-আন্দোলনে এখন বড় দল নয়, ছোট ছোট নাগরিক মঞ্চই নেতৃত্ব দিয়ে চলেছে।” চলচ্চিত্র উৎসবটিতে ভারতের এখনকার নানা গণ আন্দোলন নিয়ে ছবিওদেখানো হয়।