SSKM Hospital

অশান্তি বরদাস্ত নয়, নাম না করে সটান মদনকেই হুঁশিয়ারি এসএসকেএমের, দাবি, ‘সম্মতি’ মুখ্যমন্ত্রীরও

এসএসকেএমের বিরুদ্ধে রোগী ভর্তি না করানোর অভিযোগ তুলে বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন মদন মিত্র। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তারই জবাব দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৩ ১৪:৩৮
Share:

মদন মিত্রের অভিযোগের পর এসএসকেএম হাসপাতালের পাল্টা বার্তা। ফাইল চিত্র।

এসএসকেএম হাসপাতালের বিরুদ্ধে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের অভিযোগের পর পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পিজির ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি জানান, হাসপাতাল চত্বরে কোনও রকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের পাশেই আছেন। উল্টে নাম না করে হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছেন তিনি।

Advertisement

সাংবাদিক বৈঠকে এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বলেছেন, ‘‘কাল রাতে হাসপাতালে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। ইচ্ছাকৃত ভাবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সদের হেনস্থা এবং গালিগালাজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আমি তাঁকে ঘটনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি এ ক্ষেত্রে ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলেছেন।’’

ডিরেক্টর আরও বলেন, ‘‘যে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে হামলা করলে সরকার ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে দোষীদের শাস্তি দেয়। এসএসকেএম হাসপাতালের ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কাল যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের সকলের ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। সেই ফুটেজ দেখে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

Advertisement

শুক্রবার রাতে বাইক দুর্ঘটনায় আহত শুভদীপ পালকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে ভর্তি নিতে চাননি। মদন মিত্র নিজে যাওয়ার পরেও ওই রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মদনের আরও অভিযোগ, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কিংবা অরূপ বিশ্বাসদের হস্তক্ষেপেও কাজ হয়নি। পিজি হাসপাতালে ‘দালালরাজ’ চলছে বলে অভিযোগ মদনের। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের আমলে আমি এক মিনিটের মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতাম।’’ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে এসএসকেএম বয়কটের ডাক দিয়েছেন মদন।

এসএসকেএমের বক্তব্য, ভেন্টিলেশনে থাকা এক রোগীকে হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই সময় ট্রমা কেয়ারে ভেন্টিলেশন শয্যা খালি ছিল না। কর্তব্যরত এক মহিলা মেডিক্যাল অফিসার রোগীর পরিজনদের বুঝিয়ে বলেছিলেন, রোগীকে ভর্তি করানো সম্ভব নয়। শুক্রবার এসএসকেএমের জরুরি বিভাগে ৯০০ জন রোগী এসেছিলেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মধ্যে ৫০০ জনকে ভর্তি করানো গিয়েছে।

হাসপাতালে দালালরাজের অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘কোনও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার বরদাস্ত করা হবে না। রোগী ভর্তি না হলেই হাসপাতালে দালালরাজের অভিযোগ করা হয়। এটা বরদাস্ত করা হবে না। গুন্ডামিও আমরা বরদাস্ত করব না। স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরকারের যা দৃষ্টিভঙ্গি, এসএসকেএমেরও তাই। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

বাম আমলে এই এসএসকেএম ছিল মদনের ‘জায়গির’। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও দীর্ঘ দিন পিজিতে মদনের সেই প্রতিপত্তি বজায় ছিল। এমনকি, তিনি যখন গ্রেফতার হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, শোনা যেত, তখনও তিনি উডবার্ন ওয়ার্ডে থেকেই গোটা এসএসকেএম হাসপাতালকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। সেই ‘দাপট’ যে এখন আর চলবে না, পরোক্ষে যেন তা-ই বুঝিয়ে দেওয়া হল শনিবারের সাংবাদিক বৈঠকে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বলেই মদনের নাম করেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন ছাড়া এমন সাংবাদিক বৈঠক করা সম্ভব ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ, এসএসকেএমের ঘটনায় মদনকেই পরোক্ষে কড়া বার্তা দেওয়া হল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement