এসএসকেএম হাসপাতালে রোগী ভর্তি করাতে না পেরে ক্ষুব্ধ মদন মিত্র। ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতাল বয়কটের ডাক দিলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। ওই হাসপাতালে অনেক চেষ্টা করেও রোগীকে ভর্তি করানো যায়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন মদন। তিনি এই হাসপাতাল বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। শুভদীপ পাল নামের এক যুবক দুর্ঘটনায় আহত হন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে ভর্তি নিতে চাননি। নানা ভাবে চেষ্টা করেও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো যায়নি বলে অভিযোগ। রাতেই হাসপাতালের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি এসএসকেএমে দালালরাজ চলছে বলে অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, টাকা না দিলে এই হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা হয় না।
মদনের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, আহত শুভদীপ নিজেও সরকারি হাসপাতালে ল্যাব টেকনিশিয়ানের কাজ করেন। শুক্রবার তিনি বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়লে এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে পরিষেবা মেলেনি বলে অভিযোগ। এর পর হাসপাতালে যান মদন নিজে। তিনি হাসপাতালের সামনে থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানান, পিজি হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টার সাধারণ মানুষের জন্য তৈরি। রোগীকে ভর্তি না নেওয়া গেলেও সেখানে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিষেবা মেলা উচিত। ২৪ ঘণ্টা ট্রমা কেয়ার সেন্টার খোলা থাকার পরেও কেন রোগীকে দেখা হল না, প্রশ্ন তোলেন মদন। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেননি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও জানান, যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। অরূপ বিশ্বাসও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মেসেজ করে বলেন, রোগীকে দেখা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁকে ভর্তি করানোর ক্ষমতা নেই।’’
মদনের আরও অভিযোগ, ‘‘এটা যদি সিপিএমের আমল হত, আমি এক মিনিটের মধ্যে এই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিতাম। আমাদেরই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে গরিব মানুষের কী হবে?’’
এসএসকেএম বয়কটের ডাক দিয়ে এ বিষয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন মদন। সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর আর্জি, ‘‘যত দিন না মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করছেন, তত দিন ‘পিজিকে না বলুন’।’’
রোগীকে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন মদন। এবং তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘রাস্তায় যেতে যেতে যদি এই রোগী মারা যায়, ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করব। আমি সেই মামলা লড়ব।’’
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই থাকে এসএসকেএম। এই হাসপাতালে মদন নিজেও একাধিক বার ভর্তি হয়েছেন। এসএসকেএমেরই উডবার্ন ব্লকে অতীতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। সেই পিজি হাসপাতালের বিরুদ্ধে মদনের মুখ থেকে এমন অভিযোগ শোরগোল ফেলে দিয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে হাসপাতালের সঙ্গে বারংবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ফোন ধরেননি। তাঁদের তরফে পরে কিছু জানানো হলে এই প্রতিবেদনে তা যোগ করে দেওয়া হবে।