অভিষেককে সিবিআই তলব করায় উচ্ছ্বসিত বিজেপি। একই সুর সিপিএমেরও। — ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার গত রবিবার দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতার হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। শুক্রবার অভিষেককে সিবিআই তলব করতেই টুইটারে সুকান্তের মন্তব্য, ‘‘বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এ বার ঘুঘু তোমার বধিব পরান।’’ এই প্রবাদ ব্যবহার করে তিনি কী বলতে চেয়েছেন তা স্পষ্ট না হলেও বিজেপি শিবির যে শনিবারের ঘটনা পরম্পরায় খুশি, তা স্পষ্ট।
অভিষেককে তলব নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে সিবিআই তলব করতে বাধ্য হয়েছে। ওঁর উচিত, তদন্তে সহযোগিতা করা।’’ তবে সুকান্ত অন্য অভিযোগও তুলেছেন। জিজ্ঞাসাবাদকে ভয় না পেলে বার বার অভিষেক আদালতের দ্বারস্থ কেন হয়েছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘তিনি তো বার বার বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হব, ফাঁসির মঞ্চে চড়ব। আবার জিজ্ঞাসাবাদ থেকে অব্যাহতি চাইতে কোর্টেও যাব বলেছেন। গেছেনও। এক মুখে এত রকম কথা কেন? নির্দোষ হলে জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতায় এত ভয় কেন? আগেই সহযোগিতা করলে ২৫ লাখের থাপ্পড় হজম করে সিবিআইয়ের কাছে যেতে হত না।’’
খানিকটা একই সুর সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের। তিনি বলেন, ‘‘যত রকম আইনি এবং লাইনি পথ আছে সব চেষ্টাই করেছেন। কিন্তু তাতে কাজ হয় না। গরু পাচার, কয়লা পাচারের অভিযোগে তাঁর নাম আছে সবাই জানত। কিন্তু তিনি যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতেও যুক্ত, তা তো ওঁর দলের লোকেরাই সামনে এনেছেন। এখন তদন্ত দরকার। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করা দরকার।’’
গত শুক্রবার প্রাক্তন তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেকের রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাই কোর্ট। ওই দিন শুনানিতে অভিষেকের আইনজীবী হাই কোর্টকে পুরনো নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানান। একই সঙ্গে অভিষেককে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেওয়ারও আর্জি জানানো হয়। এই সময়ের মধ্যে তদন্তকারী সংস্থা যাতে চরম পদক্ষেপ করতে না পারে, সে জন্য আবেদন করেন অভিষেকের আইনজীবী।
কিন্তু বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা নির্দেশ দেন, কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় ইডি এবং সিবিআই প্রয়োজনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করলেও শুক্রবার অভিষেকের আবেদন জরুরি ভিত্তিতে শুনতে রাজি হয়নি বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। দ্রুত এই আবেদন শোনা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমও। জানান, গ্রীষ্মাবকাশের পর আদালত খুললে তা সম্ভব হতে পারে। এর পরে পরেই সিবিআই নোটিস পাঠায়। সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে শনিবার সকাল ১১টায়। নিজে সে কথা টুইট করে অভিষেক জানিয়েছেন, ‘‘এক দিনের আগাম নোটিস না দেওয়া সত্ত্বেও আমি এই সমন মেনে চলব।’’