জেলে বই পড়ে সময় কাটাচ্ছেন পার্থ। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সেল ব্লক। তার দু’নম্বর সেল। শুক্রবার রাত আটটার পর থেকে আপাতত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঠিকানা এটাই। জীবনে এই প্রথম বার জেলের চৌখুপিতে রাত কাটাতে হল রাজ্যের একদা দাপুটে মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অপসারিত মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। কেমন আছেন তিনি? জেল সূত্রে খবর, ভাল আছেন পার্থ। তাঁর অনুগামীরা যদিও বলছেন, জেলে যতটুকু ভাল থাকা যায়, ততটাই!
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতের মেয়াদ কাটিয়ে আপাতত পার্থ প্রেসিডেন্সি জেলে। জেলের সহস্রাধিক কয়েদির মধ্যে এক জন। নাকতলার বাড়িতে যে শীঘ্রই ফিরতে পারবেন, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। বরং বিষয়টিকে ‘দিবাস্বপ্ন’ই মনে করছেন অনুগামীরা। জেল সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত আটটার পর সেলে ঢোকানো হয় তাঁকে। তার পর থেকে সেল ব্লকের দু’নম্বরেই রয়েছেন। বাহুল্যবর্জিত সেই সেলে পার্থের জন্য রয়েছে একটি টেবিল ফ্যান। এ ছাড়া সেলের মধ্যেই একটি অংশে রয়েছে ‘অ্যাটাচ টয়লেট’। ইডির কাছে পার্থের যে জামাকাপড় ছিল, তা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে যাওয়া হয়েছে। পার্থের বেশ কিছু বইপত্রও জেল কর্তৃপক্ষের হাতে দিয়েছে ইডি। তা পার্থের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জেল থেকে দেওয়া হয়েছে একটি কম্বল। জেল সূত্রে খবর, টেবিল ফ্যানের হাওয়ায় কম্বল বিছিয়ে সেই বইপত্র পড়েই সময় কাটছে রাজ্যের প্রাক্তন দাপুটে মন্ত্রীর।
পার্থের রয়েছে সুগারের সমস্যা। তাই খাওয়াদাওয়ায় বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয় তাঁকে। জেলে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য যে খাবার, পার্থকে দেওয়া হচ্ছে তা-ই। শনিবার সকালে দুটো বিস্কুট দিয়ে চা খেয়েছেন। দুপুরে খেয়েছেন অল্প ভাত, ডাল, সবজি। জেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পার্থ ভাল আছেন। তবে আরও একটি সূত্রের দাবি, নাকতলার বাড়ি থেকে ইডি হেফাজত, তার পর প্রেসিডেন্সি জেলের চৌখুপি— এই ক’দিনেই তাঁর মধ্যে এসেছে একটা বড় বদল। তিনি বেশ চুপচাপ হয়ে গিয়েছেন। জেলেও পার্থের এই বদলে যাওয়া কর্মীদের একাংশের নজর এড়ায়নি।
তিনি একদা ছিলেন রাজ্যের শাসক দলের মহাসচিব। বিধানসভায় বসার আসন ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ঠিক পাশে। এ হেন পার্থ যখন প্রেসিডেন্সি জেলে, তখন তাঁকে আলাদা করে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। জেল সুপারের দফতরের তরফে দাবি, জেলের হাজার দুয়েক কয়েদি যে ‘ট্রিটমেন্ট’ পান, পার্থের জন্যও বরাদ্দ তা-ই। বাড়তি কিছুই না।