Mid day Meal

নববর্ষে স্কুলে ফ্রায়েড রাইস-আলুর দম, উঠছে প্রশ্ন

কলকাতার মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কার্তিক মান্নার দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের কথা ভেবে এই বিশেষ মেনুর ব্যবস্থা হয়নি।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪২
Share:

ভোজ: নববর্ষ উপলক্ষে মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের জন্য ছিল ডিম কষা, ফ্রায়েড রাইস, আলুর দম এবং মিষ্টি। সোমবার, শিয়ালদহ এলাকার একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।

প্রতিদিনের মেনু বলতে ভাত, ডাল, তরকারি এবং সপ্তাহে এক দিন ডিম। তবে, সোমবার নববর্ষ উপলক্ষে কলকাতার স্কুলগুলির পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে পাতে পড়েছে ফ্রায়েড রাইস, ডিম কষা, আলুর দম, মিষ্টি। যদিও নববর্ষের এই বিশেষ মেনুকে কেন্দ্র করে শিক্ষকদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, সামনে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই কি এই বিশেষ মেনুর আয়োজন? শিক্ষকদের দাবি, এর আগে কোনও দিন নববর্ষ উপলক্ষে এমন বিশেষ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। সেই সঙ্গে এই বিশেষ মেনুর জন্য আলাদা করে অর্থ বরাদ্দের কথা ঘোষণা করার প্রয়োজন ছিল বলেও মনে করছেন তাঁরা। কারণ, মিড-ডে মিলের যা বরাদ্দ, সেই টাকায় এমন বিশেষ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা কার্যত অসম্ভব।

Advertisement

এ দিন হিন্দু স্কুল থেকে শুরু করে শিয়ালদহ টাকি বয়েজ, মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর-সহ শহরের সব স্কুলেই বিশেষ মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, যে সব স্কুলে মিড-ডে মিলের রান্না হয়, সেখানে ডিম কষা হলেও যে সব স্কুলে কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়, সেগুলির বেশির ভাগ জায়গাতেই ডিম কষার বদলে সেদ্ধ ডিমের ব্যবস্থা ছিল। যেমন, মিত্র ইনস্টিটিউশন, ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে আলুর দম, ফ্রায়েড রাইস, ডিমসেদ্ধ এবং লাড্ডু দেওয়া হয়েছিল।’’ অন্য দিকে, শিয়ালদহ টাকি বয়েজের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে রান্না হয়। ফ্রায়েড রাইসের সঙ্গে ডিম কষা, আলুর দম, মিষ্টি দেওয়া হয়েছে। সবাই খুব আনন্দ করে খেয়েছে।’’

যদিও পড়ুয়াদের পুষ্টির জন্য এক দিনের এই বিশেষ মেনুর উপযোগিতা কতটা— সেই প্রশ্ন তুলেছে ‘উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘সামনেই লোকসভা ভোট। তাই কি এই আয়োজন? গত বার পঞ্চায়েত ভোটের আগেও তিন মাস মিড-ডে মিলে বিশেষ মেনুর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কোনও বারই তো নববর্ষে বিশেষ খাবার থাকে না। যদি বিশেষ খাবার দিতেই হয়, তা হলে ছাত্রপিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে সপ্তাহে প্রতি দিন অন্তত ডিমের ব্যবস্থা করা হোক।’’ তাঁর অভিযোগ, এই বিশেষ মেনুর ব্যবস্থা করতে গিয়ে অনেক স্কুলে শিক্ষকদের নিজেদের পকেট থেকেও টাকা দিতে হয়েছে।

Advertisement

‘বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা বলেন, ‘‘পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিলের জন্য পড়ুয়াপিছু বরাদ্দ ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বরাদ্দ ৮ টাকা ১৭ পয়সা। এই টাকায় পড়ুয়াদের ঠিক মতো পুষ্টি কি সম্ভব? হঠাৎ এক দিন এ রকম বিশেষ মেনুর ব্যবস্থা না করে বরং বরাদ্দ বাড়িয়ে অতিরিক্ত পুষ্টি ধারাবাহিক করা হোক।’’

যদিও কলকাতার মিড-ডে মিলের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কার্তিক মান্নার দাবি, ‘‘লোকসভা ভোটের কথা ভেবে এই বিশেষ মেনুর ব্যবস্থা হয়নি। করোনা-পর্বের পরে স্কুল খুললে তখনও মিড-ডে মিলে অতিরিক্ত পুষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তখন তো কোনও ভোট ছিল না।’’ তিনি আরও জানান, বিশেষ মেনুর জন্য অতিরিক্ত খরচের বরাদ্দ কলকাতার স্কুলগুলিকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement