দক্ষিণেশ্বর মন্দির। ফাইল চিত্র।
অতিমারি থেকে রক্ষা পাক সারা বিশ্ব। কালীপুজোর রাতে দ্বিপ্রহরে সেই প্রার্থনা জানাতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করলেন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ। চার প্রহরের ভবতারিণীর পুজোর অঙ্গ হিসেবে সোনার তৈরি চার ইঞ্চি আসন অঙ্গুরীয়তে হল সেই বিশেষ পুজো।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পুজো এ বার ১৬৬তম বছরে পড়ল। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘করোনার জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে সকলের মুক্তির প্রার্থনা করতেই ওই বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। প্রার্থনা করছি, আগামী বছর দর্শনার্থীরা আবার স্বাভাবিক ভাবেই যেন পুজো দিতে পারেন।’’ এ দিন রঙিন বাহারি আলোর মালায় সাজানো হয়েছিল গোটা মন্দির চত্বর। তবে বিগত বছরের থেকে এ বার দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। অতিমারি পরিস্থিতির জন্য শনিবার ভোর থেকেই বিশেষ সতর্কতা নিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। মন্দির চত্বরে একসঙ্গে প্রায় ৩০০ দর্শনার্থী পুজোর লাইনে দাঁড়াতে পারেন। সেই মতো বাইরে থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে, স্যানিটাইজ়ার টানেল পার করে তবেই ভিতরে ঢোকার অনুমতি মিলেছে। মন্দিরের চাতালে আঁকা পায়ের ছবি অনুসরণ করেই দাঁড়াতে হয়েছে দর্শনার্থীদের।
পুজো দেখার কোনও সুযোগ এ বার ছিল না। অন্য বছর নাটমন্দির-সহ মন্দির চত্বরের বিভিন্ন জায়গায় বসে বড় পর্দায় সরাসরি ভবতারিণীর পুজো দেখেন দর্শনার্থীরা। এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে সেই সুযোগ পাননি তাঁরা। পুজো দেওয়ার পরে মন্দির চত্বরের ভিতরে কোথাও বসার অনুমতি ছিল না। বাইরে কুঠিবাড়ির সামনে একটি বড় পর্দা লাগানো হয়েছিল। তাতে যাতায়াতের পথে সরাসরি পুজোর সম্প্রচার দেখার সুযোগ মিলেছে।
আরও পড়ুন: তিন বছরেও অধরা রসগোল্লার ‘জিআই’ লোগো
পুজো দেখার সুযোগ না মিললেও শনিবার সারা রাত পুজো দিতে পেরেছেন দর্শনার্থীরা। তবে পুরোহিতেরা এ দিন পিপিই পরে মূল মন্দিরের গর্ভগৃহে ছিলেন। বন্ধ ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। কুশলবাবু জানান, কথামৃতে যে সাজের উল্লেখ রয়েছে ঠিক তেমন ভাবেই এ দিন স্বর্ণালঙ্কারে সাজানো হয়েছিল দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণীকে। পুজোর ভোগে পাঁচ রকম ভাজা, পাঁচ রকম মাছ, পাঁচ রকমের মিষ্টি ও অন্নভোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে অতিমারির কারণে এ বছর দর্শনার্থীদের প্রসাদ বিতরণ বন্ধ ছিল। চিরাচরিত প্রথা মেনেই শনিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বান চলে যাওয়ার পরে দক্ষিণেশ্বরের চাঁদনি ঘাট থেকে ঘটে জল তুলে এনে শুরু হয় ভবতারিণীর পুজো।