সাংবাদিক বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা পুরসভার মেয়রের পদ থেকে কেন পদত্যাগ করতে হল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে? কেনই বা তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন? তৃণমূলের একটি অংশের দাবি ছিল, দল এবং পুরসভার চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন এবং বান্ধবীকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তাই এই পরিণতি। আবার অন্য একটা অংশ বলছিল, দলের মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। তাই শেষ পর্যন্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
কিন্তু, বৃহস্পতিবার এ সব রটনা উড়িয়ে দিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন, ব্যক্তিগত কারণে বা দলের মধ্যে কোনও সমস্যার কারণে পদত্যাগ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছেন বলেই পদত্যাগ করেছেন।এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কী তিনি আদৌ মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করতে চাননি? তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়েই বাধ্য হয়েছেন পদ ছাড়তে?
দেহরক্ষী দিয়ে পুরসভায় পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর গোলপার্কের ফ্ল্যাটে সাংবাদিক সম্মেলন করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে বলেন, মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। আমি বলেছিলাম বৃহস্পতিবার পুরসভা খুললে পদত্যাগপত্র দেব। দিয়েও দিয়েছি।দলই আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছিল। নির্বাচন লড়ে সব থেকে বেশি আসন নিয়ে বোর্ড পরিচালনা করেছিলাম। নতুন বোর্ড নতুন ভাবে চলবে। কেউ অপরিহার্য নয়। শুভেচ্ছা থাকল। কোনও ধরনের সাহায্য দারকার হলে, আমি সাহায্য করব।”
আরও পড়ুন: ‘শোভনবাবু মন্ত্রী-মেয়র নন, কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না’
আরও পড়ুন: ববি হাকিম মেয়র হচ্ছেন, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, কাউন্সিলরদের বৈঠকে জানালেন মমতা
তখনও ফিরহাদ হাকিমের নাম ঘোষণা হয়নি। তার আগেই শোভন বলেন, “প্রয়োজনে আমি কাউন্সিলারের পদ থেকেও পদত্যাগ করতে পারি। দল চাইলে আমি সবই করতে পারি। আমি প্রস্তাব দিচ্ছি, নতুন মেয়রকে আমার ওয়ার্ড থেকে ভোটে জিতিয়ে আনার জন্যে কাউন্সিলর পদ থেকেই সরে যেতে রাজি আছি।”
মেয়রের পদে নাম ঘোষণার পর ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমরা একসঙ্গে দল করেছি। শোভন আমার অনেক দিনের বন্ধু। খুব প্রিয় বন্ধু। আমিও চাইব এই সব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসুক ও। পারিবারিক ব্যাপারে আমি যাব না। আগের মতোই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই।”