ফাইল চিত্র।
করোনার সংক্রমণ রুখতে সপ্তাহে তিন দিন সমস্ত দোকানপাট, বাজার ও রেস্তরাঁ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল দক্ষিণ দমদম পুরসভা। আজ, শনিবার থেকে এই বিধি বলবৎ করা হবে। নিয়ম ভাঙলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। ওই তিন দিন পুরসভার দফতরও বন্ধ রাখা হবে।
শুক্রবার দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জানান, মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার ওই পুর এলাকার সমস্ত বাজার ও দোকান বন্ধ রাখা হবে। তবে ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। ওই তিন দিন পুরসভাও বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা অবশ্যই চালু থাকবে। মুখ্য প্রশাসকের বক্তব্য, আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। অথচ, বার বার সচেতনতার প্রচার করা সত্ত্বেও নাগরিকদের একাংশের হুঁশ ফিরছে না। করোনা-বিধি না মানার অভিযোগ আসছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এই পরিস্থিতিতে করোনার লেখচিত্রের ঊর্ধ্বগতি থামাতেই বাধ্য হয়ে এমন ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।
এ দিন দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় ১২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে লেক টাউন ও শ্রীভূমি-সহ দশটি ওয়ার্ডে ৫৫ জন এবং পুরসভার বাকি ২৫টি ওয়ার্ডে ৭৩ জন সংক্রমিত। বৃহস্পতিবারের তুলনায় সংক্রমিতের সংখ্যা সামান্য কমেছে দক্ষিণ দমদমে। চলতি সপ্তাহের প্রথম চার দিনে ৫৩৩ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন ওই পুর এলাকায়। দক্ষিণ দমদমের সেফ হোমে অবশ্য এখন এক জনও করোনা রোগী নেই। অধিকাংশেরই চিকিৎসা চলছে বাড়িতে। তবু করোনা যে ভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে চিন্তায় পড়েছে প্রশাসন।
পুরকর্তাদের অবশ্য দাবি, এ বার এখনও পর্যন্ত গত বারের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। মৃদু উপসর্গযুক্ত কিংবা উপসর্গহীন অনেকের মধ্যেই করোনা পরীক্ষা না করানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাঁরা সকলে পরীক্ষা করালে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা বেশি হত বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পুলিশ এবং পুর প্রশাসন যৌথ ভাবে এলাকায় এলাকায় মাইকে প্রচারের কাজ শুরু করেছে। বিধি ভাঙলে চলছে ধরপাকড়।
তবে পুরকর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, বাজারগুলিতে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যাচ্ছে না। সেখানে বার বার বলা সত্ত্বেও অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না, দূরত্ব-বিধিও মানা হচ্ছে না। এই অবস্থায় দিনকয়েক বাজার বন্ধ না রাখলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা পুরকর্তাদের।
পুরকর্তারা জানিয়েছেন, বাজারগুলি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করা দরকার। বন্ধ না করে সেই কাজ করা সম্ভব নয়। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন তাঁরা। তার পরেই সপ্তাহে তিন দিন বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, দেরিতে হলেও বোধোদয় হয়েছে প্রশাসনের। বড়দিন থেকে শুরু করে নতুন বছরের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করলে আজ এই অবস্থা হত না। তবে খোদ বাসিন্দাদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। তাঁদের অনেকেই দোকানপাট, রাস্তাঘাট বা গণপরিবহণে কোনও রকম বিধি মানছেন না বলে অভিযোগ।