ভাঙাচোরা: এ ভাবেই যাতায়াত চলছে। নিজস্ব চিত্র
একের পর এক ঝাঁ চকচকে আবাসন তৈরি হলেও রাস্তা এবং নিকাশির অবস্থা বেহাল। বর্ষার দাপট বাড়তেই বাসিন্দাদের সঙ্কট তাই তীব্র হয়েছে ইএম বাইপাস সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ফরতবাদে। রাস্তা, নিকাশি এবং আলো নিয়ে বাসিন্দারা জেরবার হলেও নির্বিকার সোনারপুর পুর প্রশাসন। এমনই অভিযোগ তাঁদের।
গড়িয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন ঢালাইব্রিজ থেকে কামলাগাজি বাইপাস পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে গত কয়েক বছরে একাধিক বেসরকারি সংস্থা আবাসন তৈরি করছে। এর মধ্যে বাইপাসের পূর্ব প্রান্তে সাহাপাড়া মোড় থেকে যে রাস্তা বেরিয়েছে, তার দু’পাশে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ঝকঝকে আবাসন তৈরি হয়েছে। ওই সব আবাসনে কয়েকশো পরিবার বাস করে। এখনও বেশ কিছু সংস্থার আবাসন নির্মাণের কাজ চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাহাপাড়া মোড় থেকে পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে কিলোমিটার খানেক পর্যন্ত দু’পাশে আবাসন তৈরি হলেও পুরসভার রাস্তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়েই গাড়ি, পুলকার কিংবা অ্যাম্বুল্যান্স সবই যাচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই ভারী লরিও রাতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। ফলে রাস্তার অবস্থা আরও দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরসভার তরফে সাহাপাড়া মোড় থেকে স্থানীয় কল্যাণ সমিতি ক্লাব পর্যন্ত রাস্তায় বর্ষার আগে খোয়া ফেলে গর্ত বোজানোর চেষ্টা হয়েছিল। নাগাড়ে বৃষ্টিতে ফের রাস্তা আগের দশায় ফিরে গিয়েছে।
কল্যাণ সমিতি ক্লাব পেরোলে রাস্তার ধারে দু’টি পুকুর পড়ে। বর্ষার দাপট বাড়লেই প্রতিবছর ওই দু’টি পুকুরের জলে রাস্তা ভাসে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জল না নামা পর্যন্ত যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। পুরসভার পক্ষ থেকে পাম্প চালিয়ে জল ফেলার ব্যবস্থা করলেও তা অপ্রতুলই। ভাঙা রাস্তায় আলোর অভাব আরও বিপত্তি ডেকে আনছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় এক আবাসনের বাসিন্দা বলেন, ‘‘বছর খানেক হল ফ্ল্যাট কিনে এসেছি। কিন্তু রাস্তার হাল এত খারাপ যে অ্যাপ-ক্যাব কিংবা গাড়িচালকেরা ভিতরে আসতে চান না। রাস্তায় আলোর অভাব আরও সমস্যা বাড়িয়েছে।’’
অন্য এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘নিকাশিও এখানে বড় সমস্যা। সংস্থাগুলি ঝাঁ চকচকে আবাসন করলেও ন্যূনতম পরিকাঠামোর কাজ কিছুই করেনি। অথচ তার পরেও একের পর এক সংস্থাকে আবাসন তৈরির অনুমতি দিচ্ছে পুরসভা।’’
সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, ‘‘ওই এলাকায় রাস্তা এবং নিকাশি নিয়ে সমস্যা আছেই। পুরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চেষ্টা হচ্ছে স্থায়ী সমাধানের উপায় খোঁজার।’’
সোনারপুর (উত্তর) বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, ‘‘ওই এলাকায় এখন জনবসতি বাড়ছে। নতুন নতুন আবাসন তৈরি করা হচ্ছে। রাস্তা এবং নিকাশি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যা হবেই। দ্রুত মেটানোর চেষ্টা করা হবে। বিধায়ক তহবিল থেকে বরাদ্দের ব্যবস্থা করে কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায় তা-ও দেখছি।’’