প্রোমোটারকে মারধর। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত।
এলাকায় প্রোমোটারির কাজ করতে গেলে দিতে হবে পাঁচ লাখ টাকা! অভিযোগ, সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় এক প্রোমোটারকে মারধর করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রোমোটারের অফিসেও ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে দেওয়া হয়েছে অফিসের সিসি ক্যামেরাও। আক্রান্ত প্রোমোটারের অভিযোগ, হামলাকারীরা এসে তৃণমূল কর্মী বলেই নিজেদের পরিচয় দেন। এমনকি, নিজেদের কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীন ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি করেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে অতীন বলেন, ‘‘কেন আমার নাম বলা হয়েছে আমি জানি না। আমি বেশ কয়েক দিন ওই এলাকায় যাইনি। রানা বলে যাঁর কথা বলা হচ্ছে তাঁকে আমি চিনি। শিক্ষিত বলেই জানতাম। তবে তাঁর সঙ্গে আমার বেশি দিনের যোগাযোগ নয়। পুলিশকে বলব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানা নেই আমার। তবে আমি বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বকে জানাব। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
কাশীপুর থানা এলাকার সিঁথির মোড়ের কাছে ওই প্রোমোটারের অফিস। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে আচমকাই কয়েক জন সেই অফিসে এসে হাজির হন। দাবি করেন, এলাকায় যদি ব্যবসা করতে হয়, তবে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এ নিয়ে দু’পক্ষের বচসা বাধে। চলে কথা কাটাকাটিও। অভিযোগ, প্রোমোটার অত টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। মারধর করা হয়। তার পর অফিসের মধ্যেই ভাঙচুর চালায় ওই দুষ্কৃতীরা। অফিসে থাকা লাখখানেকের বেশি টাকা নিয়ে চম্পট দেয় বলেও অভিযোগ।
খবর পেয়ে সিঁথির মোড়ের ওই অফিসে আসেন আক্রান্ত প্রোমোটারের দাদা তাপস মজুমদার। আক্রান্ত ভাইকে উদ্ধার করে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানেই ওই প্রোমোটারের চিকিৎসা চলছে। রাতেই ঘটনার কথা কাশীপুর থানায় জানান তাপস। শনিবার সকালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাপসের কথায়, ‘‘দুষ্কৃতীরা তৃণমূল করত।’’ আক্রান্ত প্রোমোটার জানান, দুষ্কৃতীরা এসে নিজেদের কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীনের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে।
শুক্রবার মধ্যরাতে এই হামলার ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সেই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কয়েক জন বাইকে করে এসে প্রোমোটারের অফিসের সামনে দাঁড়ান। তার পর ভিতরে ঢুকে যান সকলে। অফিসের ভিতরে ওই প্রোমোটারকে মারধর করতে দেখা যায় দু’জনকে। এক জনের পরনে হলুদ এবং অন্য জনের পরনে সবুজ রঙের জামা। এ ছাড়াও আরও কয়েক জন ছিলেন অফিসের মধ্যে। সকলে মিলে মারধর করেন প্রোমোটারকে। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেননি আনন্দবাজার অনলাইন)। দাবি করা হচ্ছে, অভিজিৎ মণ্ডল ওরফে রানার নেতৃত্বেই হামলা চালানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জিতেনকুমার পাল এবং কনওয়ালজিৎ শী। তবে মূল অভিযুক্ত এখনও অধরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কথা বলেছে আক্রান্ত প্রোমোটারের সঙ্গেও।