তাড়াহুড়ো: সরকারি অনুমতি মেলার আগেই খুলে গেল মঙ্গলাহাটের কিছু দোকান। সোমবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
চলতি সপ্তাহে সার্বিক ভাবে না খুললেও আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে পুরোপুরি চালু হয়ে যাচ্ছে হাওড়ার মঙ্গলাহাট। সেই সঙ্গে কোভিড সংক্রমণ রুখতে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় সপ্তাহে এক দিন করে বাজার-দোকান বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তারও কিছুটা পরিবর্তন করে রবিবার হাওড়ার সব বাজার-দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। কারণ হিসেবে তাদের বক্তব্য, রবিবারই মানুষ মূলত বাজার করেন। পাশাপাশি ঠিক হয়েছে, হাওড়া থানা এলাকায় বাজার-দোকান এখন থেকে মঙ্গলবারের পরিবর্তে শনিবার বন্ধ থাকবে।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার সময়ে আংশিক লকডাউন ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মঙ্গলাহাট। শহরের প্রাণকেন্দ্র হাওড়া ময়দান সংলগ্ন এলাকা-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস, যেমন পুরসভা, হাওড়া আদালত, জেলাশাসকের দফতর এবং হাওড়া জেলা হাসপাতালকে ঘিরে বসা ওই হাটে প্রতি সোম ও মঙ্গলবার লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে ওই এলাকায় এত বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছিলেন যে, কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করে গোটা এলাকাই বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। তবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে ওই এলাকায় কড়া বিধিনিষেধ থাকায় সংক্রমণের মাত্রা ততটা না বাড়লেও হাট এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি।
সোমবার হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় জানিয়েছেন, মঙ্গলাহাটের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষের অনুরোধ মেনে এবং তাঁদের রুজি-রোজগারের কথা চিন্তা করে নবান্ন ও জেলা প্রশাসনের সর্বস্তরে হাট খুলে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। তার পরেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, আজ, মঙ্গলবার থেকে শাড়ির হাট খুলে দেওয়া হবে। কারণ, ওই হাট বসে মূলত বিভিন্ন বাড়ির মধ্যে। তাই খুব একটা সমস্যা হবে না। আগামী মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় বসা হাটও চালু করে দেওয়া হবে। অরূপবাবু জানান, হাট চালু হওয়ার জন্য এখন থেকে হাওড়া থানা এলাকায় মঙ্গলবার বাজার-দোকান বন্ধ থাকবে না। পরিবর্তে তা বন্ধ থাকবে শনিবার। তিনি জানান, হাট পুরোপুরি চালু হলেও সকলকে কোভিড-বিধি মেনে চলতে হবে।
সরকারি ভাবে মঙ্গলাহাট ফের খুলে দেওয়ার ঘোষণার আগেই অবশ্য এ দিন সকাল থেকে হাটে বসার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে। লরিতে করে কাপড়ের গাঁটরি ও পোশাক এনে জড়ো করতে দেখা যায় তাঁদের। অনেকের মুখেই ছিল না মাস্ক। অভিযোগ, মানা হয়নি দূরত্ব-বিধিও। ক্রেতা-বিক্রেতা, মোটবাহক ও গাড়ির ভিড়ে দুপুর থেকে তীব্র যানজটে আটকে পড়ে জেলাশাসকের বাংলো, হাওড়া পুরসভা ও হাওড়া জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা। যা দেখে জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার মন্তব্য, ‘‘মনে হচ্ছে, তৃতীয় ঢেউ আর বেশি দূরে নয়।’’