Majherhat Bridge

সেতু-স্বাস্থ্য নজরে রাখতে মাঝেরহাটে বসছে সেন্সর

আড়াই বছর আগে ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতু নতুন করে নির্মাণ করেছে রাজ্য সরকার। গত নভেম্বর মাসে ওই সেতু সাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০১
Share:

n কর্মকাণ্ড: মাঝেরহাট সেতুতে সেন্সর বসানোর কাজ চলছে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

নবনির্মিত মাঝেরহাট সেতুর স্বাস্থ্য ঠিকঠাক আছে কি না, সেটাই প্রতিনিয়ত নজরে রাখবে সে। সেতুর ভারবহন ক্ষমতায় কোনও বদল আসছে কি না, সেটাও খেয়াল রাখবে। সেই সঙ্গে সেতু নির্দিষ্ট সীমার অতিরিক্ত ভারবহন করলে বা ন্যূনতম কোনও সমস্যা ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই সতর্কবার্তা পাঠাবে মোবাইলে। নতুন মাঝেরহাট সেতুতে নয়া এই সেন্সর বসাতে খরচ হচ্ছে প্রায় চার কোটি টাকা। সেতুর কেব্‌ল, বেয়ারিং-সহ মোট ৫১টি জায়গায় সেতু-স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখতে বসছে এই সেন্সর।

Advertisement

আড়াই বছর আগে ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতু নতুন করে নির্মাণ করেছে রাজ্য সরকার। গত নভেম্বর মাসে ওই সেতু সাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়। নতুন করে এই সেতুর পরিকল্পনা করার সময়েই আধুনিক প্রযুক্তিতে রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে সেন্সর বসানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু কী প্রযুক্তির সেন্সর বসানো হবে এবং তার কাজের ধরন কেমন হবে— তা চূড়ান্ত করতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়। ফলে নতুন মাঝেরহাট সেতু উদ্বোধনের সময়ে ওই কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি। তবে সম্প্রতি ওই সেতুতে জার্মানি থেকে আনা সেন্সর বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দিন পনেরোর মধ্যেই ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন সেতুর নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা।

প্রায় ৬৫০ মিটার দীর্ঘ মাঝেরহাট সেতুর ভারবহন ক্ষমতা ৩৮৪ টন। সেতুটির মোট দৈর্ঘ্যের মধ্যে ২২৭ মিটার অংশ আবার ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। রেললাইনের উপরে ওই অংশের ভার রয়েছে ৮৪টি কেব্‌লের উপরে।

Advertisement

রাজ্যে এই প্রথম কোনও সেতু-স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এমন সেন্সর বসানো হচ্ছে। রাজ্যে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর পরে আরও দু’টি কেব্‌ল স্টেইড সেতু তৈরি হলেও এমন সেন্সর-নির্ভর ব্যবস্থা আর কোথাও নেই। মাঝেরহাট সেতুতে বসানো সেন্সরগুলি মূলত তিন ভাবে কাজ করবে। প্রথমত, সেতুর কেব্‌লের সঙ্কোচন-প্রসারণ দেখে তার ভারবহন ক্ষমতায় কোনও বদল আসছে কি না, তা লক্ষ রাখা হবে। নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত ভারবহন করা হলেই একাধিক আধিকারিকের মোবাইলে সতর্কবার্তা পাঠাবে ওই সেন্সর। দ্বিতীয়ত, সেতুর বেয়ারিং কোথাও সরে যাচ্ছে কি না, সে দিকেও নজর রাখবে সেন্সর। তৃতীয়ত, সেতুর দুলুনির মধ্যে কোথাও কোনও গোলমাল দেখলে তা-ও সঙ্গে সঙ্গেই জানাবে ওই সেন্সর। সেতু লাগোয়া একটি কন্ট্রোল রুমে বসানো কম্পিউটার প্রতি মুহূর্তে সেন্সরের পাঠানো ওই সমস্ত তথ্য বিশ্লেষণ করবে। সেই তথ্যে কোনও সামান্য ত্রুটি বা সমস্যা সামনে এলে কম্পিউটার তা তুলে তো ধরবেই, সেই সঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক আধিকারিকের মোবাইলে সরাসরি সতর্কবার্তা পৌঁছে যাবে। যা দেখে সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হতে পারবেন আধিকারিকেরা। এ ছাড়া দিনরাত সেন্সরের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে সেতুতে যান চলাচলের প্রকৃতি এবং তার প্রভাব সম্পর্কেও জানা যাবে।

এ প্রসঙ্গে সেতু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সেতু রক্ষণাবেক্ষণের ধ্যানধারণা বদলাচ্ছে। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কোথায় সমস্যা দেখা দিতে পারে, তা অনেক আগেই আঁচ করা যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement