বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁ দিকে), আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ (ডান দিকে)। ফাইল ছবি।
টেট মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের দুই নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের পর, আবারও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বর্ষীয়ান আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তাঁর মতে, তড়িঘড়ি এক পক্ষের বক্তব্য শুনেই কোনও নির্দেশ দেওয়াটা সুবিচারের লক্ষণ নয়।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার হাই কোর্টের যে দু’টি নির্দেশের উপর দেশের শীর্ষ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে, সেই দু’টি নির্দেশই প্রাথমিক ভাবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া। পরে, তাঁর দু’টি নির্দেশের পক্ষে সায় দিয়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও। একটি নির্দেশে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি পদ থেকে অপসারিত হন মানিক ভট্টাচার্য। অন্য নির্দেশে চাকরি থেকে সরানো হয় ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে। এই দুই নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি হওয়ার পরেই অরুণাভর তোপ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার মুখোমুখি বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন এই দু’জনে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শোনার পর একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া টেলিফোন সাক্ষাৎকারে আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ বলেন, ‘‘বিচারপতি হয়েছি বলেই যা খুশি করা যায় না। বিচারপতির চেয়ারে বসে সব পক্ষকেই শুনতে হবে। এক পক্ষকে শোনার পর তড়িঘড়ি নির্দেশ দেওয়া ঠিক নয়। এটাই কলকাতা হাই কোর্টের দুর্দশা।’’ তার পরেই অরুণাভর মন্তব্য, ‘‘২৬৯ জন জানতেই পারল না, আর তাঁদের চাকরি চলে গেল! এ ভাবে হয়? মানিক ভট্টাচার্যকে যে ভাবে ডেকে জেরা করেছে সেটা কি করা যায়? না, এটা করা যায় না।... গোটাটাই প্লেয়িং টু দ্য গ্যালারি হয়ে গেছে।’’ অরুণাভ আরও বলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে নির্দেশ দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টে হয়তো সেটাই থাকবে। কিন্তু সব পক্ষকে সুযোগ দিয়েই সুপ্রিম কোর্ট তা করবে।’’
প্রসঙ্গত, একাধিক বার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়েছেন অরুণাভ। হুমকি, হুঁশিয়ারির পর্যায়েও গিয়েছে সেই বিতণ্ডা। প্রত্যেক বারেই অবশ্য আপাত ভাবে ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’ হয়েছে। কিন্তু সম্পর্কটা যে মধুর হয়নি তা পরিষ্কার।