—প্রতীকী ছবি।
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এখনও বৈশাখ আসেনি। তবে তার আগে ধীরে হলেও ডেঙ্গি আক্রান্তেরসংখ্যা বাড়ছে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায়। সামনেই লোকসভা ভোট। সে কথা মাথায় রেখে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জোর বাড়াচ্ছে পুরসভা। প্রতিটি ওয়ার্ডেইতিমধ্যেই স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। তাঁদের দায়িত্ব বণ্টন করার কাজও শুরু করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
যদিও বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, পুরপ্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই ভোটের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। শীঘ্রই নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত হয়েপড়বেন পুরসভার আধিকারিক ও কর্মীরাও। ফলে রোগ প্রতিরোধের কাজের গতি কতটা বজায় থাকবে, তা নিয়ে কিছুটা হলেও সংশয়রয়েছে। পুরসভার অবশ্য দাবি, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বছরে শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটের জন্য সেই কাজে বাধা পড়বে না।
পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ১১ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে সেই সংখ্যা ছিল পাঁচ। গত বছর এই পুর এলাকায় ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন কম-বেশি সাড়ে তিন হাজার মানুষ। সরকারি মতে, আট জনের মৃত্যু হয়েছিল। যদিও বেসরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা ছিল আরও বেশি।
ইতিমধ্যে পুর এলাকার বহুতল এবং আবাসনগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে পৃথক ভাবে বৈঠক করেছে পুরসভা। বদ্ধ জায়গায় মশার ওষুধ স্প্রে করার উপরে জোর বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তমাল আদকের কথায়, ‘‘শুধু মশার ওষুধ স্প্রে করলে সমস্যা মিটবে না। যত্রতত্র আবর্জনা ফেলার প্রবণতা বন্ধ করা, নিয়মিত আবর্জনা অপসারণে বেশি জোর দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এখন কম হলেও মশার প্রকোপ রয়েছে। বর্ষার সময়ে তা বাড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’ বাসিন্দারা আরও বলছেন, পরিত্যক্ত কারখানা, গুদাম, নির্মীয়মাণ বহুতল, ফাঁকা জমি এবং জলাশয়গুলির ক্ষেত্রে নিয়মিত নজরদারি প্রয়োজন।
তবে ভোটের আগে অল্প হলেও ডেঙ্গি সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়ায় পুর কর্তৃপক্ষকে বিঁধতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘গণমাধ্যমে পুরসভা দাবি করে, তারা ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু তার পরেও মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আসছে না।’’ এই অভিযোগ উড়িয়ে শাসকদলের দাবি, বিষয়টি নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করার চেষ্টা হচ্ছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস জানান, ভোটের সময়েও যাতে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যাঘাত না ঘটে, সেই লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে পুরপ্রতিনিধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদেরও দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।