সায়েন্স সিটি।—ফাইল চিত্র
বাঙালি বিজ্ঞানীর আবিষ্কার নোবেল পায়নি। তবে তাঁর আবিষ্কারের সূত্র ধরেই যোগাযোগ ব্যবস্থায় এগিয়েছে বিশ্ব। গাছেরও যে প্রাণ আছে, তা-ও বলেছিলেন সেই জগদীশচন্দ্র বসুই।
তবে এশিয়ায় পদার্থবিদ্যার প্রথম নোবেল আনেন আরও এক কলকাতাবাসী বিজ্ঞানী, সি ভি রমন। বিজ্ঞানীদের অনেকেই মনে করেন, নোবেল পাওয়া উচিত ছিল সত্যেন্দ্রনাথ বসু ও মেঘনাদ সাহারও। যদিও তাঁদের গবেষণার পথ ধরেই নোবেল জিতেছেন বিদেশি বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানচর্চার পীঠস্থান সেই কলকাতাতেই এ বার আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান উৎসবের আসর। যার মূল উদ্যোক্তা কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ৫ থেকে ৮ নভেম্বর বিশ্ববঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে তা চলবে। সায়েন্স সিটিতে হবে বিজ্ঞান মেলা ও প্রদর্শনী। ঘটনাচক্রে, নভেম্বরেই জন্ম জগদীশচন্দ্র ও রমনের।
বুধবার সেন্ট্রাল গ্লাস ও সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (সিজিসিআরআই) এই অনুষ্ঠানের সাংবাদিক বৈঠকে এসেছিলেন বিজ্ঞান চর্চায় শীর্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এর ডিরেক্টর জেনারেল শেখর সি মান্ডে। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের বিজ্ঞানচর্চায় কলকাতা প্রথম সারিতে ছিল। এখনও এখানে উন্নত গবেষণা হয়। সিএসআইআর প্রতিষ্ঠাও এ শহরেই।’’ বস্তুত, চলতি বছরেই ছ’জন বাঙালি বিজ্ঞানী শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার পেয়েছেন।
মান্ডে জানিয়েছেন, এই উৎসবে আড়াই হাজার স্কুলপড়ুয়া যোগ দেবে। থাকছেন তরুণ প্রজন্মের বিজ্ঞানীরাও। এ ছাড়াও ইসরোর প্রধান কে শিবনের আসার কথা। আসতে পারেন দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) প্রধান এবং দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরাও থাকবেন। মহিলা গবেষক, কৃষিবিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের মতো বিষয় নিয়েও অনুষ্ঠান থাকবে।
যে সব ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবসায় সফল হয়েছেন, তাঁদের কয়েক জনের আসার কথা রয়েছে এই উৎসবে। প্রযুক্তি নির্ভর স্টার্ট-আপ ব্যবসার উপরেও অনুষ্ঠান থাকবে। তবে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারের অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন এবং আমন্ত্রণ পত্র ছাড়া ঢোকা যাবে না। যদিও সায়েন্স সিটির বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে যেতে পারেন সকলেই।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সায়েন্স সিটিতে বিজ্ঞানের বিভিন্ন প্রকল্প এবং মডেল দেখা যাবে। মূলত জনজীবনে বিজ্ঞানের প্রয়োগ নিয়েই এই প্রদর্শনী। এ ছাড়াও সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞান নির্ভর সিনেমার দেখানো হবে। ২০১৫ সালে দিল্লিতে প্রথম এই উৎসব হয়। এর পরে মুম্বই, চেন্নাই ও লখনউয়ে হয়েছে। কলকাতায় এই উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে বোস ইনস্টিটিউট, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি, সিজিসিআরআই-এর মতো বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানও।