Road Accident

Road Accident in Kolkata: এ ভাবে হারাতে হল বন্ধুকে! বিশ্বাসই হচ্ছে না সহকর্মীর

তিনি নিজে ফোনে কথা বলতে বলতে বসেন পিছনে। কিছুটা দূর যাওয়ার পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। পিছন থেকে একটি বাস ধাক্কা মারায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন দু’জনেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৭:১৮
Share:

সৌগত রায়চৌধুরী নামে ওই যুবককে এসএসকেএমে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। প্রতীকী ছবি

স্কুটার চালিয়ে কলকাতা থেকে ফেরার পথে মোবাইলে ফোন আসায় সহকর্মীকে বলেছিলেন চালকের আসনে বসতে। তিনি নিজে ফোনে কথা বলতে বলতে বসেন পিছনে। কিছুটা দূর যাওয়ার পরেই ঘটে দুর্ঘটনা। পিছন থেকে একটি বাস ধাক্কা মারায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন দু’জনেই। স্কুটার-আরোহীর পেট এবং হাতের উপর দিয়ে চলে যায় বাসের চাকা। সৌগত রায়চৌধুরী নামে ওই যুবককে এসএসকেএমে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। বুধবার সন্ধ্যায় বিদ্যাসাগর সেতুতে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর থেকে কার্যত থম মেরে গিয়েছেন স্কুটারচালক শেখ শাহজাদ। চোখের সামনে সহকর্মীর এ ভাবে প্রাণ হারানোর দৃশ্য এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁকে। এই দুর্ঘটনায় হাতে এবং পাঁজরে গুরুতর চোট পেয়েছেন শাহজাদ নিজেও।

Advertisement

জানা গিয়েছে, বছর ২৬-এর শাহজাদের বাড়ি হাওড়ার বাউড়িয়ায়। পেশায় একটি মোবাইল সংস্থার কর্মী ওই যুবকের বাড়িতে রয়েছেন মা, বাবা ও দাদা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বুধবার মাঝরাতে বাড়ি ফিরেছেন শাহজাদ। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘একা বাড়ি ফেরার মতো মনের অবস্থা ছিল না। বাড়ির সকলে গিয়ে আমাকে নিয়ে আসে।’’

এ দিন শাহজাদ জানান, বুধবার ভিআইপি রোডের কাছে একটি হোটেলে তাঁদের সংস্থার মিটিং ছিল। নিজের বাইক থাকলেও সৌগতের সঙ্গে যাবেন বলে শাহজাদ বাইক নিয়ে বেরোননি। তিনি বলেন, ‘‘সৌগত আমাকে বলল, বাইক রেখে বাসে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজ়ায় চলে আসতে। মিটিংয়ে যাওয়ার সময়ে ও-ই স্কুটার চালিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে আমার হাতে সৌগতই পুরস্কার তুলে দেয়।’’ শাহজাদের কথায়, ‘‘মাসখানেক আগে যখন সৌগতের পদোন্নতি হয়, সেই সময়ে আমি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে ছিলাম। মাস দুয়েক আগে সৌগত আমাকে ফোন করে ওই সংস্থায় কাজে যোগ দিতে বলল। ওর কথা মতো জুন থেকে কাজে যোগ দিই।’’

Advertisement

কিন্তু চোখের সামনে যে এমন ভাবে সেই বন্ধুরই মৃত্যুর সাক্ষী থাকতে হবে, সেটা এখনও ভাবতে পারছেন না শাহজাদ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাস্তার ধার ঘেঁষে যাচ্ছিলাম। আগে টোল প্লাজ়ার লাইনে যাওয়ার জন্য বাসটি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। পিছন থেকে সেটি আচমকা ধাক্কা দেয়। দু’জনে ছিটকে পড়ি। দেখলাম, বাসের চাকা সৌগতের শরীরের উপর দিয়ে চলে গেল।’’

বুধবার মাঝরাতে বাড়ি ফিরলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে ফের হাসপাতালে যেতে হয়েছিল শাহজাদকে। পাঁজরে অসম্ভব যন্ত্রণা হওয়ায় এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। হাড় ভেঙেছে কি না জানতে এক্স-রে হয়েছে হাতেরও। সেই সঙ্গে আরও কিছু পরীক্ষা করাতে বলেছেন ডাক্তারেরা। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার এসএসকেএমে ময়না-তদন্তের পরে সৌগতের দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। তবে কার গাফিলতিতে চোখের সামনে সহকর্মীকে হারাতে হল, দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন শাহজাদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement