আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের দাবি, তিনি অপারেশন থিয়েটার খুঁজছিলেন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আরজি করের মৃত মহিলা ডাক্তারের কাছে নাকি কোনওদিন চিকিৎসার প্রয়োজনে যাননি অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় এ কথাই জানিয়েছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে অনুমান, ওই ব্যক্তির সঙ্গে মহিলা চিকিৎসকের কোনও পূর্ব পরিচিত ছিল না। কিন্তু ওই অভিযুক্ত তো হাসপাতালের কেউ নন। তা হলে হঠাৎ করে কী ভাবে তিনি পৌঁছে গেলেন জরুরি বিভাগের চার তলায়? সূত্রের খবর, সে কথাও পুলিশি জেরার মুখে স্বীকার করেছেন তিনি। অভিযুক্ত জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগের ভবনে তিনি অপারেশন থিয়েটার খুঁজছিলেন। সেটি খুঁজতে খুঁজতে চার তলায় পৌঁছে যান। তার পরে সেমিনার কক্ষের সেই অকুস্থলে। সেখানেই মহিলা চিকিৎসককে তিনি দেখতে পান এবং ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত জানিয়েছেন তিনি ঘটনার সময় একাই ছিলেন।
পুলিশের ওই সূত্র মারফত আরও জানা যাচ্ছে, শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের পর বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত। তিনি যে আরজি করে গিয়েছিলেন, সে কথা তাঁর এলাকার অনেকেই জানতেন। পরে যখন এলাকাবাসীরা সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারেন আরজি করের ঘটনা, তখন অভিযুক্তকে সে কথা জানান তাঁর এক পরিচিত ব্যক্তি।
সূত্রের দাবি, পরিচিত ওই ব্যক্তির থেকে সে কথা শোনার পর অভিযুক্তের ভাবখানা এমন ছিল, যেন কিছু জানেন-ই না। এমন একটি ঘটনা ঘটিয়ে আসার পরও অভিযুক্তের মস্তিষ্ক ছিল কার্যত হিমশীতল। আরজি করের ঘটনার কথা শুনে অভিযুক্ত নাকি বলেছিলেন, “আচ্ছা দেখছি।”
শুক্রবার সকালে হাসপাতালের চার তলার সেমিনার কক্ষ থেকে উদ্ধার হয়েছিল মহিলা চিকিৎসকের দেহ। পুলিশের অনুমান শুক্রবার ভোরেই খুন করা হয়েছিল তাঁকে। তদন্তকারী দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণ ও খুনের আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত একাধিক বার অভিযুক্তকে দেখা গিয়েছে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করতে।
ওই সূত্রের দাবি, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ তাঁকে দেখা গিয়েছিল হাসপাতালে। পরে শুক্রবার ভোরে আবার পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। ঘড়িতে তখন ভোর প্রায় ৪টে। প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট হাসপাতালে ছিলেন তিনি। তার পর আবার বেরিয়ে চলে যান। বৃহস্পতি থেকে শুক্রের মধ্যে কখনও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে, কখনও আবার ওই ভবনের পাঁচ তলাতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।