খাদ্য দফতরের কাজে বেজায় চটেছেন রেশন ডিলাররা। ফাইল ছবি।
খাদ্য দফতর ও রেশন ডিলারদের সঙ্ঘাত অব্যাহত! এ বার অনলাইনে রেশন ডিলারদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছে খাদ্য দফতর। আর এই ঘটনায় চটেছেন রাজ্যের রেশন ডিলাররা। যদিও খাদ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁরা জানতে চাইছেন, কত জন ডিলার সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন। মৃত, সাসপেন্ড বা বাতিল হয়ে যাওয়া ডিলারদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। কেউ ডিলারশিপ ছেড়ে দিলে সেটিকেও চিহ্নিত করতে চাইছেন তাঁরা। যাবতীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়ে গেলে কোথাও কোনও ফাঁকফোকর থাকলে তা পূরণ করবে খাদ্য দফতর। জেলা থেকে মহকুমা পর্যায়ের অফিসগুলিকে এই কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দফতরের তরফে। চলতি এপ্রিলের মধ্যে পুরো কাজ শেষ করতে হবে।
খাদ্য দফতরের এই পদক্ষেপে রাজ্যের রেশন ডিলাররা ক্ষুব্ধ। কারণ, সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে খাদ্য দফতর। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোথাও রেশন ডিলারশিপ ফাঁকা হলে সেই জায়গায় খাদ্যশস্য বণ্টনের দায়িত্ব সাময়িক ভাবে কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী, সমবায় সংস্থা বা সরকারি সংস্থাকে দেওয়া হবে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে রেশন ডিলারদের লাইসেন্স কখনও সাময়িক কখনও বা পুরোপুরি বাতিল হয়। কিংবা অনেক ডিলার তাঁদের ডিলারশিপ স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন। বা কোথাও ডিলারশিপ ফাঁকা হওয়ার পর যদি দেখা যায় কাছাকাছি কোনও রেশন ডিলার নেই, তা হলে অস্থায়ী লাইসেন্স ইস্যু করা যাবে। জেলাশাসকের সাহায্য নিয়ে কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী, নথিভুক্ত সমবায় সংস্থাকে চিহ্নিত করে রেশনের লাইসেন্স দেওয়া যাবে। কোনও সরকারি সংস্থাকেও রেশনিং লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে। সাধারণ ভাবে ছ’মাসের জন্য লাইসেন্স দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। খাদ্য দফতর চাইলে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ব্যবস্থা চালিয়ে যেতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়েই সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে দু'পক্ষের মধ্যে। এই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেছে রেশন ডিলারদের সংগঠন অল বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস' ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
তার পরেই খাদ্য দফতর নতুন করে অনলাইনে রেশন ডিলারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। এমন পদক্ষেপে খুশি নন রেশন ডিলাররা। অল বেঙ্গল ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস' ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন-এর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘খাদ্য দফতরের কিছু আধিকারিক পুরো রেশন ব্যবস্থাকে ঘেঁটে দিতে চাইছেন। রেশন ডিলারদের বিব্রত করে সাধারণ মানুষকে রেশন পরিবহন সেবা থেকে বঞ্চিত করতে চাইছেন তাঁরা। গত অক্টোবর মাস থেকে এই প্রক্রিয়া ধারাবাহিক ভাবে চলছে। মনে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে বিপদে ফেলতেই আধিকারিকরা এই সব করছেন।’’ তবে দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, খাদ্য দফতরে রেশন ডিলারদের যাবতীয় তথ্য রাখা হয় বহু দিন থেকেই। এখন সেই তথ্য আরও সুরক্ষিত করতে অনলাইনের মাধ্যমে রাখা হচ্ছে। পরিষেবা যাতে সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করা যায়, সেই জন্যেই এ কাজ করা হয়েছে। এর সঙ্গে রেশন ডিলারদের সঙ্গে সঙ্ঘাতের কোনও কারণ নেই।