—প্রতীকী চিত্র।
প্রতি বছর দুর্যোগের কারণে শয়ে শয়ে গাছ উপড়ে যায় কলকাতা শহরে। ২০২২ সালের আমফান থেকে শুরু করে চলতি বছরের রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কলকাতা পুরসভার বনসৃজন প্রকল্পের কাজের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই এ বার সেই সব ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বনসৃজন প্রকল্পে বিকল্প সব বৃক্ষরোপণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। শনিবার কলকাতা পুরসভার সাংবাদিক বৈঠকে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আশির দশকে বামফ্রন্ট জমানায় যখন কলকাতায় প্রথম বনসৃজনের কাজ শুরু হয়, তখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কাজ শুরু করে পুরসভা। দ্রুত বনসৃজন করতে সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়া, সুপারি, কদমফুলের গাছ বেশি সংখ্যায় লাগানো হয়। দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে কলকাতাকে সবুজ করে তুললেও, এই সব গাছের মূল খুব একটা গভীর না হওয়ায় ঝড়ে গাছগুলি পড়ে যাওয়ায় কলকাতার বনসৃজনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তাই মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিকল্প বৃক্ষের সন্ধান করতে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। গত বছর রাজস্থান সফরে গিয়ে সেখানকার নিম গাছ দেখে তার বিষয়ে জানতে চান মেয়র। সেখানকার প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে মেয়র জানতে পারেন, এই গাছগুলি আকারে প্রকাণ্ড না হলেও, তাদের মূল দৃঢ় ভাবে মাটির গভীরে প্রবেশ করে। তাই সেই নিম গাছের চারা রাজস্থান থেকে কলকাতায় আনা হয়েছে মেয়রের উদ্যোগে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু রাজস্থানী নিম গাছ কলকাতার রাস্তায় লাগানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজস্থানী নিম ছাড়াও, মাটির গভীরে যে সব গাছের শিকড় পৌঁছয়, সেই সব গাছ লাগানোর উপর জোর দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে, দেবদারু, জাম, কাঁঠালের মতো গাছগুলিকে। উল্লেখ্য, আমফান ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কলকাতা শহরে ২০২২ সালের মে মাসে পাঁচ হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছিল। আবার রেমালের কারণে এ বছর মে মাসে ৩০০-র বেশি গাছ উপড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুরসভা। তাই এই সব দুর্যোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিকল্প শক্তিশালী গাছ লাগিয়ে কলকাতার সবুজায়ন করতে চায় পুরসভা।