(বাঁ দিকে) দেব। ঘাটালে সেচ দফতরের আধিকারিকেরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের ফলঘোষণার দু’সপ্তাহ পরেই দেবের লোকসভা কেন্দ্রে শুরু হয়ে গেল ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণের তোড়জোড়। গত ১২ জুন সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল সাংসদ। প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, সেখানেই বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার পরেই সেচ দফতরের আধিকারিকদের দেখা গেল ঘাটালে।
ফি বছর বর্ষায় বন্যাবিধ্বস্ত হয় ঘাটালের বিস্তীর্ণ অংশ। এ বার বন্যার জলের চাপ কমাতে প্রথমেই দাসপুরের দু’টি সেচ খাল— চন্দেশ্বর এবং শোলাটোপা খাল সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। দেবের সঙ্গে বৈঠকের ১০ দিনের মাথায় সেচ দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরা আসেন দাসপুরে। শনিবার তাঁরা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। বৈঠকে ঠিক হয়েছিল দাসপুরের দু’টি সেচ খালকে শিলাবতী এবং কংসাবতীর সঙ্গে যুক্ত করে জলের চাপ কমানো হবে। সেই প্রস্তাব কার্যকর করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে দাসপুরে আসেন সেচ দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ঘাটাল দাসপুরের শাসকদলের একাধিক নেতা, উপস্থিত ছিলেন জেলা সেচ দফতরের একাধিক আধিকারিক। ওই প্রতিনিধি দলটি দাসপুরের চন্দেশ্বর খালের মুখ থেকে দাসপুরের সুরতপুর পর্যন্ত এলাকা খতিয়ে দেখে। প্রায় ৫ কিলোমিটার প্রস্তাবিত খাল কাটার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে তারা।
’২৪-এর লোকসভা ভোটে ঘাটালে দেব নির্বাচনী প্রচারে প্রধান ইস্যুই করেছিলেন ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানকে। বস্তুত, অর্ধ শতক ধরে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান ঘিরে আবর্তিত হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতি। কিন্তু ওই প্রকল্প আর বাস্তবায়িত হয়নি। প্রথম বার সাংসদ হয়ে অভিনেতা দেব ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কথা তুলেছিলেন সংসদে। তৃতীয় বার তৃণমূল তাঁকে লোকসভার টিকিট দেওয়ার পর দেব বলেছিলেন, ‘‘দিদির হাত ধরেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের স্বপ্ন পূরণ হবে।’’ ভোটপ্রচারে এসে তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, ‘‘এ বার দেব এবং জুন জিতলে মেদিনীপুরকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান উপহার দেব।’’ তিনি প্রচারের মঞ্চে এ-ও বলেন, ‘‘কেন্দ্র টাকা না দিলে টাকা দেবে রাজ্য। দিদি ভাইকে তো ফেরাতে পারে না।’’ কটাক্ষ করেছিল বিজেপি। প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ খোঁচা দিয়ে জানান, ছোটবেলা থেকে শুনে আসছেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা। তাঁর দাবি ছিল, কেন্দ্র তার বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য বাকি অংশ দিয়ে কাজ শুরু করতে পারেনি। আবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে জানান, এক মাসের মধ্যে কেন্দ্র টাকা না দিলে ৩১ ডিসেম্বরের আগেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবে রাজ্য সরকার। সেই লোকসভা ভোট মিটতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের তোড়জোড় শুরু হল। তাতে খুশি ঘাটালবাসী।