গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কলকাতায় আসার দিন চারেক আগেই হোটেলের বুকিং সেরে রেখেছিলেন রাজারাম রেগে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিলও মিটিয়ে ছিলেন। এমনটাই উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। পুলিশ সূত্রে এও জানা গিয়েছে, আরও কয়েক দিন কলকাতায় থাকার পরিকল্পনা থাকলেও রেগে হঠাৎ করেই শহর ছাড়েন। তড়িঘড়ি কলকাতা ছাড়ার কারণ খুঁজছে লালবাজার। কলকাতায় এসে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ‘গোয়েন্দাগিরি’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে রেগের বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ এপ্রিল রাজারাম নাম-পরিচয় লুকিয়ে যোগাযোগ করেন অভিষেকের সঙ্গে। ২০ এপ্রিল ফোন করেছিলেন অভিষেকের ব্যক্তিগত সচিবকে। কিন্তু তার পর হঠাৎ শহর ছাড়েন তিনি। লালবাজার সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে অসহযোগিতা করছেন রেগে। একাধিক প্রশ্নই এড়িয়ে যাচ্ছেন বা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
কলকাতায় যে চার জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন রেগে, তাঁদেরও চিহ্নিত করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের তলব করা হয়েছে। রেকি করার বিষয়ে এই চার জনের ভূমিকা এবং তাঁরা সরাসরি সাহায্য করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে রেগের সঙ্গীকেও চিহ্নিত করেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, রাজারামের ফোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। একাধিক ছবির পাশাপাশি তথ্য আদান-প্রদানের বিভিন্ন অ্যাপও রয়েছে। সেগুলি বিশদে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
লালবাজার সূত্রে খবর, গত ১৮ এপ্রিল রাজারাম নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। উঠেছিলেন এসএন ব্যানার্জি রোডের এক হোটেলে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দফতরের পাশাপাশি হরিশ মুখার্জি রোডে অভিষেকের বাড়িতেও ‘রেইকি’ করেছিলেন রাজারাম। এতটা পর্যন্ত জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এখন তাঁরা জানতে চান, রাজারাম কলকাতায় এসে ঠিক কী কী করেছিলেন। অভিযোগ, ২৬/১১ হামলার অন্যতম কুশীলব লস্কর জঙ্গি ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তিনি। অভিষেকের আপ্তসহায়কের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করেছিলেন রাজারাম। কী করে তিনি নম্বর জোগাড় করলেন? কলকাতায় রাজারামের পূর্ব পরিচিত কারা, এ বিষয়ে বিশদে জানতে চায় পুলিশ।