Road Accidents

জাতীয় সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ অংশে ঘটে চলেছে মৃত্যু, টনক নড়বে কবে?

হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক দফতর জানিয়েছে, সাঁকরাইলের ধূলাগড় থেকে বালি পর্যন্ত যে ২৪ কিলোমিটার রাস্তা আছে, সেখানে অধিকাংশ জায়গাতেই পথচারীদের জন্য ফুট ওভারব্রিজ নেই। নেই সার্ভিস রোডও।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৭:২৮
Share:

মাত্র ২৪ কিলোমিটার রাস্তায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৯ জনের। প্রতীকী ছবি।

মাত্র ২৪ কিলোমিটার রাস্তায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৯ জনের। ১১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে হাওড়ার সাঁকরাইল থেকে বালি পর্যন্ত অংশে গত এক বছর চার মাসে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এটাই পরিসংখ্যান। গোটা হাওড়া জেলা ধরলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২১১। জাতীয় সড়কে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এই সংখ্যা উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের। হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনা রুখতে জাতীয় সড়কের ট্র্যাফিক পরিকাঠামো যাতে উন্নত করা হয়, তার জন্য বার বার চিঠি দিয়েও কোনও ফল হয়নি।

Advertisement

হাওড়া সিটি পুলিশের ট্র্যাফিক দফতর জানিয়েছে, সাঁকরাইলের ধূলাগড় থেকে বালি পর্যন্ত যে ২৪ কিলোমিটার রাস্তা আছে, সেখানে অধিকাংশ জায়গাতেই পথচারীদের জন্য ফুট ওভারব্রিজ নেই। নেই সার্ভিস রোডও। যার ফলে হাইওয়ে ধরে হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ছেন মানুষ। ওই রাস্তায় মোটরবাইক দুর্ঘটনাও বেড়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের অভিযোগ, সব থেকে বড় সমস্যা হল, জাতীয় সড়কে যে পথ-বিভাজিকা আছে, সেটি কয়েক জায়গায় লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা থাকলেও বাকি অংশে মাত্র ১০ ইঞ্চি উঁচু কংক্রিট রয়েছে। পথচারীরা যা সহজেই টপকে চলে যেতে পারেন। আবার যে সব জায়গায় রেলিং দেওয়াপথ-বিভাজিকা রয়েছে, সেখানে অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় বাসিন্দারা রেলিং ভেঙে দিচ্ছেন যাতায়াতের সুবিধার জন্য। যার জেরে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পেরোতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সাঁকরাইল থেকে বালির সিসিআর সেতু পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার রাস্তায় কয়েকটি ফুট ওভারব্রিজ, সার্ভিস রোড এবং কংক্রিটের উঁচু পথ-বিভাজিকা তৈরির জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বৈঠকে বার বার বলা হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।’’ হাওড়া সিটি পুলিশের দেওয়া হিসাব বলছে, ২০২২ সালে জাতীয় সড়কের ওই ২৪ কিলোমিটার অংশে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩৪টি। আহত হয়েছেন ১২৮ জন। মারা গিয়েছেন ১২৩ জন। এ বছর গত চার মাসেই পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬৫টি। মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। অর্থাৎ, গত এক বছর চার মাসে মৃত্যু হয়েছে ১৫৯ জনের। সব থেকে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে রানিহাটি, অঙ্কুরহাটির হাট, জালান কমপ্লেক্সের ১ ও ৩ নম্বর গেট, রিফিল পেট্রল পাম্প এবং চামরাইল ও জয়পুর বিল এলাকায়।

Advertisement

এ বিষয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এটা ঠিকই যে, ওই রাস্তায় আরও ফুট ওভারব্রিজ, সার্ভিস রোড ও কংক্রিটের পথ-বিভাজিকাপ্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিলেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ তা তৈরি করবেন। ইতিমধ্যেই রানিহাটি ও অঙ্কুরহাটিতে ফুট ওভারব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তবে, জাতীয় সড়কের দু’পাশে জবরদখল ও বেআইনি পার্কিং যে ভাবে বাড়ছে এবং মানুষ নিজেদের সুবিধার জন্য যে ভাবে রেলিং উড়িয়ে দিচ্ছেন, তা বন্ধ না হলে দুর্ঘটনা কমবে না। এ ব্যাপারে হাওড়া সিটি পুলিশকেওব্যবস্থা নিতে হবে। এ কথা আমরা জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement