পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ফাইল চিত্র ।
বাকি যাঁরা জড়িত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে তাঁদের পরিচিতি এখনই প্রকাশ্যে আনা হবে না। গ্রেফতার হওয়ার পরই পুলিশ তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করবে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার। মূল চক্রীর পরিচয়ও গ্রেফতারের পর প্রকাশ্যে আনা হবে। তিনি এ-ও জানান, যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে এক জনকে সম্প্রতি অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
সিপি সাংবাদিক বৈঠকে আরও জানান, তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনও অধরা মূল চক্রী। বেশ কিছু দিন ধরেই এই খুনের ছক কষা হচ্ছিল বলেও পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। শুধুমাত্র লুটপাটের জন্য এই খুন করা হয়নি বলে মনে করেছিল পুলিশ। প্রতিহিংসার জেরে শাহ দম্পতি খুন হন বলেও মনে করে পুলিশ। তদন্ত এগিয়েছিল সেই সূত্র ধরেই। একই সঙ্গে শাহ দম্পতির উপর মূল অভিযুক্তের অনেক দিনের রাগ ছিল বলেও মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ কমিশনার আরও জানান, এক জন আত্মীয় শাহ পরিবারের কাছ থেকে ২০১৯ সালে ১ লক্ষ টাকা ধার হিসেবে নিয়েছিলেন। আর সেই আর্থিক লেনদেনের জেরেই এই খুন হয়েছে। সম্ভবত ওই আত্মীয়ই বাকি আততায়ীদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। এঁদের মধ্যেই এক জন ছুরি চালিয়েছিলেন মৃতদের উপর। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়াল জানান, তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও আরও কয়েক জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া আরও একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছিল, গুজরাতি দম্পতি খুনের ঘটনায় মূল চক্রী সম্ভবত তাঁদের মেজো জামাইয়ের এক আত্মীয়। অশোক শাহ কিছু অর্থ ঋণ হিসাবে দিয়েছিলেন তাঁদের মেজো জামাইয়ের ওই আত্মীয়কে। সেই ঋণের অর্থ পুরোটা মেটাননি বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। ওই ঋণের টাকা মেটানো নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই টালবাহানা চলছিল। সম্প্রতি কিছু টাকা ফেরতও দিয়েছিলেন। অনুমান, বাকি টাকা যাতে না মেটাতে হয় সেই কারণেই খুন হয়ে থাকতে পারেন শাহ দম্পতি। ঠিক কী কারণে খুন, তা জানা যাবে কলকাতা পুলিশের সিপি-র সাংবাদিক বৈঠক থেকে।
তিন দিনের মাথায় কিনারা হল ভবানীপুর হত্যাকাণ্ডের। তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবারই তিন জনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এক আত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে তদন্ত এগোচ্ছিল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই খুন হয়েছেন ভবানীপুরের শাহ দম্পতি।
গত সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পাড়াতেই খুন হন শাহ দম্পতি। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্যবসায়ী অশোক শাহকে ছুরি মেরে খুন করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশের অনুমান, তাঁর স্ত্রী রশ্মিতা শাহকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি ঘটে সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ।