অশান্ত: ঝোড়ো হাওয়ায় উত্তাল গঙ্গা। শনিবার, হাওড়া লঞ্চঘাটে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
‘বিপজ্জনক বাড়িতে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা পুরসভার অস্থায়ী শিবিরে যান।’ কলকাতা পুরসভার এমনই বার্তা বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছেছে। শিবিরগুলি হয়েছে পুর-প্রাথমিক স্কুলগুলিতে। শনিবার বিকেলে পুরসভার কন্ট্রোল রুমে বসে মেয়র ফিরহাদ হাকিমও দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের ফোনে বলেন, ‘‘বৃষ্টি বাড়ছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলির বাসিন্দাদের পুরসভার আশ্রয়ে আসতে অনুরোধ করুন।’’ এর পরেই উত্তরের বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে যান কর্মীরা।
মেয়র জানান, সতর্ক করা হয়েছে বরো চেয়ারম্যানদের। গঙ্গা তীরবর্তী বস্তি ও বাড়িগুলির উপরে নজর রাখতে বলা হয়েছে। পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি। প্রস্তুত নিকাশি পাম্পও। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ, বিশেষ পুর কমিশনার তাপস চৌধুরী, পুর সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডল-সহ বিভিন্ন দফতরের ডিজি-দের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র। শিবিরগুলির জন্য রাখা আছে ত্রিপল, খাবার, পানীয় জল। বৃষ্টিতে মশার দাপট বাড়ার আশঙ্কায় পুর স্বাস্থ্য দফতরকে সজাগ করা হয়েছে।
বুলবুল নিয়ে শনিবার দিনভর কপালে ভাঁজ কলকাতা পুর প্রশাসনের। বারবার খবর আসে বুলবুল তার শক্তি বাড়িয়ে গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত করতে পারে। তবে কলকাতায় ৫০-৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগ থাকার আশঙ্কা। এমনিতেই রাস্তার ধারের গাছের শিকড়ের গভীরতা নিয়ে শঙ্কিত পুরকর্তারা। তার উপরে দিনভর বৃষ্টিতে গোড়া নরম হয়ে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে। এ দিন সকালেই বালিগঞ্জের কাছে একটি ক্লাবে গাছ ভেঙে মৃত্যু হয় এক জনের। মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘গাছ কাটার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র নিয়ে তৈরি পুরসভার দল। ইতিমধ্যেই গোটা দুয়েক গাছ পড়েছে। রাতের পরিস্থিতির দিকেই বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে।’’
এক ঘণ্টায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিতে শহরের বহু জায়গা ডুবে যায়। আবহাওয়া দফতর সূত্রে আভাস, বুলবুলের কারণে বৃষ্টি ৭০-২০০ মিমি হতে পারে। এক দিকে গাছ পড়া, তার সঙ্গে জমা জল থেকে ডেঙ্গির আশঙ্কা ঘিরে অস্বস্তিতে প্রশাসন।