ফাইল চিত্র।
শিক্ষাঙ্গনে হামলার ঘটনা নতুন নয়। মাস পাঁচেক আগে বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় ধৃত ৩৭ জন বিজেপি সমর্থক জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এখনও চার্জশিট তৈরির প্রক্রিয়াই শেষ করতে পারেনি আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে আরএসএসের শাখা সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, গত ১৪ মে লোকসভা ভোটের প্রচার উপলক্ষে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো চলাকালীন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ফেলার পাঁচ মাস পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা হল না কেন? প্রসঙ্গত, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনার পরেই স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও তদন্ত কমিটিতে ছিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ওসি কৌশিক দাস এবং বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুন্ডু। লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ওই দিন বিদ্যাসাগর কলেজে ঠিক কী ঘটেছিল এবং তাতে কারা জড়িত ছিল, সে বিষয়ে জানতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডবের পরে কলেজের তরফে এক ছাত্রী বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ মোট ৩৭ জনকে গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা, সংঘর্ষ বাধানো এবং মারধর-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত ৩৭ জন ১০ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে ছিলেন। গত ৩০ অগস্ট তাঁরা আদালত থেকে জামিন পান। আগামী ১৯ ডিসেম্বর ফের তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা। অভিযুক্তদের মধ্যে বন্দর এলাকার বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহ এই ঘটনায় প্রায় দেড় মাস জেলে থাকার পরে গত ১৩ জুলাই জামিন পেয়েছেন। রাকেশের দাবি, ‘‘ঘটনার দিন আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ধারেকাছেও ছিলাম না। তার তথ্যপ্রমাণও পুলিশ দিতে পারবে না। সেই কারণেই
পুলিশ এখনও এই ঘটনার চার্জশিট জমা দিতে পারছে না।’’
কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘চার্জশিট জমা দিতে গেলে যা যা করণীয়, তার বেশ কিছু তদন্ত প্রক্রিয়া বাকি রয়েছে। ওই প্রক্রিয়া শেষের মুখে। আশা করছি, শীঘ্রই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।’’