প্রতীকী ছবি।
এক জনের বাবা শহরের একটি নামী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রটি নিজেও ভাল কলেজে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছেন। পাশাপাশি যুক্ত রয়েছেন মডেলিংয়ে।
অন্য দিকে, ওই যুবকের সঙ্গী বন্ধুও উচ্চবিত্ত পরিবারের। তিনিও মডেলিং করেন। তাঁর বাবা একটি বেসরকারি সংস্থার শীর্ষ পদে কর্মরত।
স্কুটি চুরির অভিযোগে দুই বাড়ির ওই দুই যুবক, সৌরভ মুখোপাধ্যায় এবং সুরজ রায় আপাতত পুলিশি হেফাজতে। গত বুধবার রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার ম্যুর অ্যাভিনিউ থেকে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইক চুরি যায়। রাতেই রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আশিস সামন্ত নামে ওই ব্যবসায়ী। অভিযোগে তিনি জানান, বুধবার রাত ১টা নাগাদ বাড়ি ফেরার আগে ৪৬ ম্যুর অ্যাভিনিউয়ে দোকানের বাইরে বাইক দাঁড় করিয়ে সংলগ্ন একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন রোজকার মতো। ফিরে এসে দেখেন, মোটরবাইক উধাও! আশিস পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি দশ মিনিটের মতো মন্দিরে ছিলেন। তার মধ্যেই এই ঘটনা।
তদন্তে নেমে প্রথমেই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে শুরু করে পুলিশ। আর তাতে একটি ফুটেজ দেখে এবং সেখানে থাকা যুবকদের পরিচয় জানতে পেরে হকচকিয়ে যান তদন্তকারীরা। কারণ, ওই ফুটেজে একটি মোটরবাইক নিয়ে যে দু’টি ছেলেকে এলাকা ছাড়তে দেখা গিয়েছিল, খোঁজ নিয়ে জানা যায় তাঁরা দু’জনেই উচ্চবিত্ত পরিবারের। এমন দুই যুবককে হঠাৎ গ্রেফতার করার আগে এলাকারই আর এক তরুণকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজে স্কুটিতে থাকা দুই যুবকের সঙ্গে ওই তরুণকে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল। ফলে জেরা শুরু হতে তিনি খানিকটা ঘাবড়ে যান। পুলিশকে জানান, মোটরবাইক চুরিতে কোনও ভাবেই জড়িত নন তিনি। ওই তরুণের কাছ থেকেই মেলে দুই যুবকের পরিচয়। থানায় ডেকে আনা হলে তাঁরা চুরির কথা স্বীকার করেন ঠিকই। কিন্তু কেন চুরি করলেন, কিছুতেই সে কথা বলেননি।
প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃত দুই যুবক যে কোনও নেশার সঙ্গে যুক্ত, তেমন কোনও প্রমাণও পাওয়া যায়নি। ফলে মোটরবাইক চুরির কারণ এখনও রহস্যই। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, ভবানীপুর, নিউ আলিপুর এলাকায় এমন বেশ কয়েকটি মোটরবাইক এবং স্কুটি চুরির মামলায় সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, ছিনতাই বা ইভটিজিংয়ের জন্য সম্ভ্রান্ত ঘরের তরুণ-যুবকেরা ওই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু পরে তাঁরা ছোটখাটো অপরাধ করে চুরি করা মোটরবাইক এবং স্কুটি অন্যত্র ফেলে চলে গিয়েছে। যার জন্য ধরা যায়নি অপরাধীদের।