সৌম্যদীপ পাল
সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে ডেকেও সাড়া পাননি মা। ঘুম চোখেই খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখেন, একটি ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। কয়েক বার ডাকা সত্ত্বেও সাড়াশব্দ মেলেনি ওই তরুণের। শেষে কাছে গিয়ে মা দেখতে পান, ছাদের সিলিং থেকে নাইলনের দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন ছেলে।
রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ রিজেন্ট পার্ক থানার সাতবিঘা বাগানপাড়া থেকে এ ভাবেই উদ্ধার হল বছর আঠেরোর এক তরুণের দেহ। মৃতের নাম সৌম্যদীপ পাল (১৮)। পুলিশের অনুমান, ওই তরুণ আত্মঘাতী হয়েছেন।
শ্যামলীদেবী জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে আইন নিয়ে পড়ার জন্য সম্প্রতি শ্যামবাজারের এক কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন সৌম্যদীপ। তাঁর বাবা সৌমেনবাবুর মানিকতলায় একটি ছোট ব্যবসা রয়েছে। তিনি সেখানেই থাকেন। বছর পাঁচেকের একটি মেয়েও রয়েছে ওই দম্পতির। এ দিন দুপুরে সৌম্যদীপের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, মেয়েকে আঁকড়ে বসে আছেন শ্যামলীদেবী। পরিবার সূত্রের খবর, মোবাইল গেমের প্রতি ভয়ঙ্কর আসক্তি ছিল ওই তরুণের। প্রায় সারা দিনই মোবাইল নিয়ে গেম খেলতেন। গত তিন দিন কলেজেও যাননি।
হঠাৎ করে এমন চরম পথ কেন বেছে নিলেন ওই তরুণ?
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, ছেলের মোবাইল-আসক্তি নিয়ে শ্যামলীদেবী তাঁকে বকাবকি করায় তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে শ্যামলীদেবী বলেন, ‘‘আমি ছেলেকে পড়ার জন্য মাঝেমধ্যে অল্পস্বল্প বকাবকি করলেও কখনও মোবাইল কেড়ে নিইনি। এমনকি কেন ও সারা দিন মোবাইলে বুঁদ হয়ে থাকছে, তা নিয়ে এমন কিছু বলিনি যার এমন পরিণতি হতে পারে।’’