প্রতীকী ছবি।
কোদাল দিয়ে নিকাশি নালা সাফ করছিলেন পুরসভার কর্মীরা। হঠাৎই তাতে আটকে যায় শক্তপোক্ত একটা কিছু। কী আটকেছে, দেখতে গিয়ে চোখ কপালে সাফাইকর্মীদের। দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে মানুষের কঙ্কাল! তবে তাতে খুলি এবং দু’টি হাত নেই।
মঙ্গলবার সকালে, বরাহনগরের গোপাললাল ঠাকুর রোডে ওই ঘটনার পরে খবর যায় পুলিশে। তারা এসে কঙ্কালটি উদ্ধার করেছে। কী ভাবে ওই নিকাশি নালায় কঙ্কাল এল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ব্যারাকপুরের ডেপুটি কমিশনার (জোন-২) আনন্দ রায় বলেন, ‘‘দেহটি কঙ্কাল হয়ে যাওয়ায় এখনও পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। দেখে পূর্ণবয়স্ক কারও দেহ বলেই বোঝা যাচ্ছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বরাহনগরের গোপাললাল ঠাকুর রোডে আইএসআইয়ের গেটের উল্টো দিকেই রয়েছে ওই নিকাশি নালা। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বরাহনগর পুরসভার সাফাইকর্মীরা ওই নিকাশি নালা সাফ করতে গিয়েছিলেন। কোদাল দিয়ে পাঁক তোলার সময়ে আচমকাই সেটি আটকে যায়। অনেক টানাটানি করেও লাভ হয়নি। সাফাইকর্মীরা বুঝতে পারেন, বড়সড় কোনও কিছু আটকে গিয়েছে কোদালে। এর পরেই তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। প্রথমে নীল রঙের জিন্স চোখে পড়ে তাঁদের। এর পরে নালার মধ্যে কয়েকটি হাড় দেখতে পান তাঁরা।
পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীরা ভয় পেয়ে আমাদের খবর দেন। পুরসভার তরফে তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে নালা থেকে তুলতেই দেখা যায় যে, সেটি জিন্স-জামা পরা একটি কঙ্কাল।’’ পুলিশের অনুমান, দেহটি বেশ কয়েক মাসের পুরনো। প্রাথমিক ভাবে সেটি কোনও পুরুষের কঙ্কাল বলেই মনে করা হচ্ছে।
নিকাশি নালায় কী ভাবে আস্ত কঙ্কাল এল, তা তদন্তকারীদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। কয়েক মাস আগে যদি কেউ দেহ ওই নালায় ফেলে দিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে পচনের সময়ে দুর্গন্ধ ছড়ানোর কথা। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু টের পাননি। আবার মাঝেমধ্যেই ওই নালা সাফ করেন সাফাইকর্মীরা। তাঁরাও এর আগে কিছু দেখেননি।
তা হলে কি নালায় কঙ্কাল শুধু ফেলা হয়েছিল? সেখানেও রয়েছে ধোঁয়াশা। নিকাশি নালায় যে ভাবে কঙ্কালটি পড়ে ছিল, তা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, মাত্র কয়েক দিন আগেই সেটি নালায় ফেলা হয়েছে। তবে নালায় কঙ্কাল মিললেও খুলি ও হাত দু’টি কোথায় গেল, সেই রহস্য এখন ভাবিয়ে তুলেছে তদন্তকারীদের।