—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পুজোর কয়েক দিন শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এমনিতেই নাভিশ্বাস ওঠে লালবাজারের। যানজট থেকে রাজপথে মানুষের ঢল সামলাতে পথে নামতে হয় পুলিশকর্তা থেকে নিচুতলার আধিকারিকদের। অতিরিক্ত কয়েক হাজার পুলিশ নামিয়েও বহু ক্ষেত্রে রক্ষা মেলে না। এ বছরের পুজোয় এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল ও প্রতিবাদের সম্ভাবনা। পরিস্থিতি সামলাতে পুজোয় অতিরিক্ত বাহিনীর পাশাপাশি, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ২০০টি পুলিশ পিকেটের ব্যবস্থা করছে লালবাজার। মূলত, বিক্ষোভ বা জমায়েতের আগাম খবর পেতেই পিকেটের ভাবনা বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।
মহালয়া থেকে পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে শহরে। সন্ধ্যা হলেই ভিড় বাড়ছে মণ্ডপে। তবে সমান্তরাল ভাবে শহর এখনও আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মুখর। উৎসবের বদলে প্রতিবাদ চলবে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চিকিৎসক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের বড় অংশ।
পুজোর দিনে উৎসব ও প্রতিবাদ, দুই-ই হলে? লালবাজার সূত্রের খবর, গত বছর পুজোর ভিড় সামলাতে প্রায় আট হাজার অতিরিক্ত পুলিশকর্মী নেমেছিলেন শহরে। চতুর্থী থেকে রাস্তায় নামে বাহিনী। সেই সংখ্যা এক ধাক্কায় আরও অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। এ বছর প্রায় ১০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশকর্মী নামবেন। এ ছাড়া, ট্র্যাফিক পুলিশের অতিরিক্ত চার হাজার কর্মী এবং সাড়ে পাঁচ হাজার হোমগার্ড রাস্তায় থাকবেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, অতিরিক্ত বাহিনীর পাশাপাশি শহরে এ বছর প্রায় ২০০টি পুলিশ পিকেট থাকছে। প্রতিটি পিকেটে দু’-চার জন পুলিশকর্মী থাকবেন। লালবাজারের তরফে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ পিকেটের কথা বলা হলেও কোনও প্রতিবাদ, বিক্ষোভ বা মিছিলের আঁচ পেতেই এই ভাবনা বলে মত অভিজ্ঞ মহলের। গত কয়েক সপ্তাহে দেখা গিয়েছে, শ্যামবাজার, আর জি কর, কলেজ স্কোয়ার, যাদবপুর-সহ একাধিক জায়গায় মূলত প্রতিবাদের বড় জমায়েত হয়েছে। সেই সব এলাকার আশপাশে একাধিক বড় পুজো রয়েছে। তাই সেই সব এলাকা ও তার আশপাশে পুলিশ পিকেট রাখা হবে বলে সূত্রের খবর।
আগামী কয়েক দিনে শহরে মিছিল বা সমাবেশের অনুমতি কেউ নিয়েছেন কিনা, তা দেখার পাশাপাশি, পুজোর দিনে কেউ মিছিলের অনুমতি নিতে এলে কোথা থেকে, কখন মিছিল হবে, কত ক্ষণ চলবে, কত জমায়েত হতে পারে— এমন একাধিক প্রশ্ন তৈরি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অনুমতিহীন জমায়েতই চিন্তা বাড়াচ্ছে পুলিশের। অনুমতিহীন জমায়েত বা মিছিলের আঁচ পেতেই পুলিশ পিকেটের ভাবনা।
মিছিল বা প্রতিবাদ নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও এ বার পুজোয় যান নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে ভিড় বা জমায়েত নিয়ন্ত্রণ যে অন্যতম চ্যালেঞ্জ, তা নগরপাল মনোজ বর্মার কথায় উঠে এসেছে। যে কোনও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে বাহিনী প্রস্তুত বলে তিনি জানান। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনুমতিহীন যে কোনও কিছুতেই সমস্যা বাড়ে। এ বার রাস্তা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, তা দেখতে সব রকম প্রস্তুতি রয়েছে। অতিরিক্ত বাহিনী নামানোর পাশাপাশি প্রতিটি ডিভিশনে পর্যাপ্ত বাহিনী থাকছে।’’