হৃষীকেশ ও রিয়া
আত্মহত্যার ইমেল পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই হৃষীকেশ পাল আর রিয়া সরকারের ব্রহ্মপুরের ফ্ল্যাটে পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তার পরেও যুগলকে বাঁচানো যায়নি। বিছানায় কম্বলের নীচ থেকে উদ্ধার হয় দু’টি মৃতদেহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে এই দৃশ্য দেখার পর থেকেই ধন্দ শুরু হয় তদন্তকারীদের মনে। ইমেল পাঠানোর পর এত দ্রুত কী ভাবে আত্মহত্যা করলেন ওই যুগল, দানা বেঁধেছিল সেই প্রশ্নই। গড়িয়ার লিভ ইন সম্পর্কে থাকা হৃষীকেশ এবং রিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সেই ধোঁয়াশা এখন একটু একটু করে কাটতে শুরু করেছে বলেই মনে করছে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে তদন্তকারীদের অনুমান, পুলিশ এবং বন্ধুবান্ধবদের মেল পাঠানোর আগেই আত্মহত্যা করেছেন হৃষীকেশ এবং রিয়া। পুলিশের যুক্তি, যুগল আত্মহত্যা করেছে বুধবার ভোরের দিকে। কিন্তু তাঁদের মেল পুলিশের কাছে এসে পৌঁছেছে সকাল ৯টা বেজে ২ মিনিটে। এই মেল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আত্মহত্যা রুখতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে পুলিশ। ঠিকানা পেতেও সমস্যা হয়নি। সকাল ৯.২০ মিনিটেই হৃষীকেশ আর রিয়ার ব্রহ্মপুরের ফ্ল্যাটে চলে যান তদন্তকারীরা। কিন্তু দেখা যায়, ফ্ল্যাটের দরজা বন্ধ। সেটি ভেঙে ঘরে ঢুকে পুলিশ দেখে, শোয়ার ঘরে প্রবল ঠান্ডা। আর বিছানায় যুগলের মৃতদেহ।
সূত্রের খবর, এতেই পুলিশ মনে করছে, নিজেদের মৃত্যু আগেই নিশ্চিত করেছিলেন ওই যুগল। শুধু তাঁদের মৃত্যুর খবর জানান দেওয়ার জন্যই ওই ইমেল করা হয়েছিল। মেলটি লিখে ‘শিডিউল’ করে রেখেছিলেন তাঁরা। যাতে নির্দিষ্ট সময় সেটি প্রাপকদের হাতে পৌঁছে যায়। আত্মহত্যার খবর জানিয়ে বন্ধুবান্ধবদের যে ব্যক্তিগত বার্তা পাঠানো হয়েছে, তা-ও কি ‘শিডিউল’ করে রাখা হয়েছিল? যদি তা-ই হয়ে থাকে, তা হলে তার জন্য কি কোনও অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছিল? এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। হৃষীকেশ আর রিয়ার ফ্ল্যাট থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ যা যা ডিভাইস পাওয়া গিয়েছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।