হেলমেটহীন এক বাইকচালকের পথ আটকালেন পুলিশকর্মীরা। বুধবার রাতে, বালিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে কোনও এলাকাতেই নিস্তার মিলবে না আইনভঙ্গকারীর। লালবাজার থেকে এমন নির্দেশ আসতেই ট্র্যাফিক ও স্থানীয় থানার পুলিশ শহরে যৌথ ভাবে অভিযানে নামল বুধবার রাতে। বেপরোয়া বাইকচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে শুরু করে বাইক আটক— সবই করল কলকাতা পুলিশ। সেই অভিযান চলল এমন অনেক এলাকাতেই, যে সব জায়গায় পুলিশ ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের ‘ছাড়’ দিত বলেই এত দিন অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে ৬০৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার মধ্যে বিনা হেলেমেটে ২০৫ জন, একটি মোটরবাইকে তিন আরোহী কিংবা বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্য ৩১৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মত্ত অবস্থায় জরিমানা করা হয়েছে ৮০ জন বাইকচালককে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ছ’টি মোটরবাইকও। বৃহস্পতিবার রাতেও ২৩টি ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় ওই অভিযান চলে। লালবাজার জানিয়েছে, এমন অভিযান লাগাতার চলবে।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভবানীপুর এবং রাজাবাজার এলাকায় আইনভঙ্গকারীদের সব চেয়ে বেশি ধরা হয়েছে।’’
সোমবার রাতে হেলমেট ছাড়া এক দল যুবক শহরের দু’জায়গায় প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ঊষসী সেনগুপ্তকে নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। তার পরেই দিন এবং রাতের শহরে এলাকা বাছাই না করে ট্র্যাফিক পুলিশকে আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়াকে হেনস্থাকারীরা বিনা হেলমেটে শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। ঊষসী নিজেও নিগ্রহকারীদের মাথায় হেলমেট নেই কেন জানতে চান। লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনায় অসন্তুষ্ট হন পুলিশ কমিশনার। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, যে সব এলাকা দিয়ে ওই যুবকেরা খালি মাথায় সোমবার রাতে বাইক চালিয়ে ঘুরেছিল, সেই সব ট্র্যাফিক গার্ডের ওসিদের সঙ্গে বুধবার বৈঠক
করেন সিপি। ওই বৈঠকেই এমন নির্দেশ দেন তিনি।
কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকদের জানান, কোনও ভাবেই যেন ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের রেয়াত করা না হয়। উল্লেখ্য, শহরের কয়েকটি জায়গায় পুলিশ বিনা হেলমেটে বাইক চালানো বা ট্র্যাফিক আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত না বলে অভিযোগ। পুলিশকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, সেই অপবাদ ঘোচাতেই লালবাজার ওই নির্দেশ দিয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশকে।