ভুয়ো পরিচয়পত্র (বাঁ দিকে) মিলেছে ধৃত শেখ নুর আমিনের হেফাজত থেকে। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের ঠিক আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির কাছেই অস্ত্র-সহ ধরা পড়েছেন এক যুবক। কী উদ্দেশ্যে ওই যুবক পুলিশ লেখা গাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নগরপাল বিনীত গোয়েল। কিন্তু তার আগেই যুবকের পুলিশ লেখা গাড়ি থেকে উদ্ধার হল একাধিক এমন জিনিসপত্র, যাতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, যুবকের হেফাজত থেকে একাধিক পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে একটি বিএসএফের। রয়েছে একটি আইবির পরিচয়পত্রও। একটি পরিচয়পত্রে যুবকের ঠিকানা হিসাবে লেখা রয়েছে সিজিও। পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবকের নাম শেখ নুর আমিন। তাঁর কাছ থেকে রাজ্য পুলিশের টুপি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই টুপি সাধারণত ব্যবহার করেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও মিলেছে পুলিশের বেল্ট। বাজেয়াপ্ত হয়েছে একটি ভোজালি, আগ্নেয়াস্ত্র এবং গাঁজা।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, আই কার্ডগুলি সবক’টিই ভুয়ো। ইচ্ছামতো ঠিকানা দিয়ে নুর ভুয়ো পরিচয়পত্র কেন বানিয়েছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ জেনেছে, পঞ্চান্ন গ্রাম এলাকার মার্টিন পাড়ায় নুরের একটি অন্দরসজ্জার দোকান রয়েছে। ২১এ মার্টিন পাড়ার সেই অন্দরসজ্জার দোকানে গিয়ে দেখা যায়, দোকান বন্ধ। সামনেই জ্বলজ্বল করছে দোকানের নাম। নুর মূলত অন্দরসজ্জার কাজকর্মই করতেন। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রথমে নুরের একটি সবুজ রঙের মোটরবাইক ছিল। সম্প্রতি তিনি একটি গাড়ি কেনেন। সেই গাড়িতেই পুলিশ লেখা স্টিকার লাগিয়ে তিনি শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
প্রসঙ্গত, ঠিক এক বছর আগে, ২০২২ সালের জুলাই মাসেও মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল, কালীঘাটের পটুয়াপাড়া হয়ে হাফিজুল মোল্লা নামে জনৈক ব্যক্তি কোনও ভাবে মমতার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। প্রায় সাত ঘণ্টা মমতার কালীঘাটের বাড়িতেই ঘাপটি মেরে বসেছিলেন তিনি। সকালে এক সাফাইকর্মী তাঁকে দেখতে পেয়ে পুলিশ ডাকেন। পরে তাঁকে হেফাজতে নেয় লালবাজার।