Kolkata Crime

লেক গার্ডেন্সে গুলিকাণ্ডের নেপথ্যে ত্রিকোণ সম্পর্ক! হোটেলের ঘরে ‘সুইসাইড নোট’ও খুঁজে পেল পুলিশ

বুধবার বিকেলে লেক গার্ডেন্সে একটি অতিথিশালায় সঙ্গিনীর পেটে গুলি চালিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালান রাকেশ। জখম তরুণীর সঙ্গে কথা বলে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে দূরত্বের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৪ ১১:৫০
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

লেক গার্ডেন্সের গুলিকাণ্ডের নেপথ্যে এক ‘তৃতীয়’ ব্যক্তির উপস্থিতি টের পাচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, নিহত রাকেশ কুমার শাহের সঙ্গে সম্পর্কে যে দূরত্বের কথা তাঁর সঙ্গিনী জানিয়েছিলেন, তার কারণ ওই তৃতীয় ব্যক্তিই। ত্রিকোণ সম্পর্কের জেরেই জটিলতা বাড়ে রাকেশ এবং তাঁর সঙ্গিনীর মধ্যে। লেক গার্ডেন্সের ঘটনা তারই অন্তিম পর্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্ত চলাকালীন একটি ‘সুইসাইড নোট’ও উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে দু’টি মদের বোতলও।

Advertisement

বুধবার বিকেলে লেক গার্ডেন্সে ‘নিউ মেট্রো’ নামে একটি অতিথিশালায় সঙ্গিনীর পেটে গুলি চালিয়ে নিজের মাথায় গুলি চালান রাকেশ। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে গিয়ে তরুণীর সঙ্গে কথা বলে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কে দূরত্বের কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। একই সঙ্গে তাঁরা এ-ও জেনেছেন যে, ওই তরুণীকে লেক গার্ডেন্সে আসার জন্য এক রকম জোর করেছিলেন রাকেশ। তাঁদের সম্পর্কে দূরত্ব কেন তৈরি হল, কেনই বা জোর করে প্রেমিকাকে ডেকে পাঠিয়ে গুলি করলেন রাকেশ, সেই সব প্রশ্নের জবাব খুঁজছিল পুলিশ। অবশেষে ওই ঘটনার ‘মিসিং লিঙ্ক’ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি এবং ‘সুইসাইড নোট’ থেকে বিভিন্ন সূত্র জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তরুণীর সঙ্গে সম্প্রতি অন্য এক যুবকের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। যা পছন্দ করছিলেন না রাকেশ। দু’জনের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। এমনকি, রাকেশ এ-ও আশঙ্কা করছিলেন যে, ওই তৃতীয় ব্যক্তির জন্য তাঁর সঙ্গিনী তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারেন। পুলিশের ধারণা, ওই আশঙ্কা থেকেই বুধবার প্রেমিকাকে ডেকে সরাসরি কথা বলেন রাকেশ। যা গড়ায় বচসায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, যে ‘সুইসাইড নোট’টি তদন্তকারীরা উদ্ধার করেছেন, সেটি ছিল রাকেশের ব্যাগের মধ্যে। যা থেকে পুলিশের ধারণা, পূর্বপরিকল্পনা করেই ওই ‘সুইসাইড নোট’ লিখে লেক গার্ডেন্সের ওই হোটেলে অস্ত্র নিয়ে পৌঁছেছিলেন রাকেশ। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ তেমনই বলছে। কারণ, প্রেমিকাকে গুলি করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই নিজের মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হন রাকেশ। ওই সময়ের মধ্যে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে নিজের ব্যাগে রাখা সম্ভব নয় বলেই মত তদন্তকারীদের। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

তারা জানতে পেরেছে, রাকেশ একজন সিভিল ডিফেন্সের ভলেন্টিয়ার। তবে তাঁর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কী ভাবে এল, তার সন্ধান করছে পুলিশ। পুলিশ এ-ও জানতে পেরেছে যে, লেক গার্ডেন্সের ওই অতিথিশালায় ওই যুগল বুধবারই প্রথম বার আসেননি। এর আগে জুন মাসেও একবার ওই হোটেলে এসে থেকেছিলেন দু’জনে। বুধবারের ঘটনার পরে তাঁদের হোটেল রুম থেকে যে দু’টি মদের বোতল উদ্ধার করে পুলিশ, তার একটির মুখ খোলা হলেও অন্যটি খোলা হয়নি।

অন্য দিকে, গুলিবিদ্ধ ওই তরুণী, যাঁকে বুধবার যাদবপুরের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছিল, তিনি আপাতত স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement