থমকে: প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসূচির জেরে দফায় দফায় যানজট হয় শহরে। শনিবার, খিদিরপুরে। ছবি: অরুণ লোধ
সকালে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ‘দেশনায়ক দিবস’ পালন ও শোভাযাত্রা। আর বিকেলে সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ওই দুই অনুষ্ঠানের জেরে দফায় দফায় শহরের উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় বাধা পেল যানবাহনের গতি। লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, ছুটির দিনে গাড়ির সংখ্যা ছিল কম। শোভাযাত্রা ও প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের সময়ে বিকল্প রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে অবস্থা সামাল দিয়েছেন ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিকেরা।
সূত্রের খবর, সকালে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য বেলা এগারোটা নাগাদ শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এ দিন বিটি রোডমুখী গাড়িগুলিকে চিৎপুর লকগেট উড়ালপুল দিয়ে পাঠানো হয়। তবে পাঁচমাথার মোড় বন্ধ থাকায় উত্তর শহরতলি থেকে শহরে আসা গাড়িগুলিকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। টালা সেতু না থাকায় একেই গাড়িগুলি পাইকপাড়া, টালা পার্ক ঘুরে এখন যাতায়াত করে। তার উপরে ওই অনুষ্ঠানের জন্য মূল রাস্তা বন্ধ থাকায় ভিন্ন পথে যানবাহনের মুখ ঘোরাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় পুলিশকে।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন বিভিন্ন গাড়িকে পাঁচমাথার মোড়ের দিকে না যেতে দিয়ে ক্যানাল সার্কুলার রোড দিয়ে উল্টোডাঙায় পাঠানো হয়। মুখ্যমন্ত্রীর শোভাযাত্রার সময়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দু’দিকেও গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। ওই সময়ে বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় বলেও পুলিশ জানিয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, শোভাযাত্রা ধর্মতলা পার করার সময়ে ডোরিনা ক্রসিংয়ে প্রায় এক ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় এক্সাইডের দিক থেকে আসা যানবাহন মেয়ো রোড ও এ জে সি বসু রোড দিয়ে ঘুরিয়ে পাঠানো হয়। বিভিন্ন রাস্তা বন্ধের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
ওই অনুষ্ঠান শেষের কিছু ক্ষণের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কনভয় যায়। সেই পথের নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখা ছিল চৌরঙ্গি, ভবানীপুর, আলিপুর-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা। এর জেরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বারবেলায় রাস্তায় বেরিয়ে ভোগান্তির শিকার হন মানুষ। বাধা পায় গাড়ির গতি। নিরাপত্তার জন্য বেলভেডিয়ার রোড বন্ধ করে দেওয়ায় চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসে নাজেহাল হয়ে বাড়ি ফেরেন অসংখ্য মানুষ।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন প্রধানমন্ত্রীর তিনটি অনুষ্ঠান ছিল এলগিন রোডের নেতাজি ভবনে, জাতীয় গ্রন্থাগারে এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে। রেস কোর্সে হেলিকপ্টার নামার পরে প্রধানমন্ত্রী সোজা চলে যান নেতাজি ভবনে। এ জন্য পুলিশ হাজরা মোড় থেকে নেতাজি ভবনের দিকে সমস্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। একই ভাবে ডিএল খান রোড, বেলভেডিয়ার রোড, কুইন্স ওয়ে এবং সংলগ্ন সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় বিকেলে বিপাকে পড়তে হয়েছে পথে বেরোনো মানুষকে। বিকেলে দেখা যায়, পিটিএসের কাছে এ জে সি বসু রোডের দু’দিকে দাঁড়িয়ে লম্বা গাড়ির সারি। একই চিত্র দেখা গিয়েছিল চৌরঙ্গি রোড, এটিএম রোডেও। লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা ভেবে কিছু সময়ের জন্য ওই রাস্তা বন্ধ করা হয়েছিল। কনভয় চলে যেতেই রাস্তা খুলে দেওয়ায় যানজট স্থায়ী হয়নি।