বিনিময়: প্লাস্টিক বর্জ্যের বদলে বাসিন্দাদের দেওয়া হচ্ছে ত্রিপল। বৃহস্পতিবার, দেগঙ্গায়। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়
পাঁচ কিলো প্লাস্টিক কিংবা পলিথিন জমা দিলে মিলবে একটি ত্রিপল। ডেঙ্গি ঠেকাতে এমনই সতর্কতামূলক পরিকল্পনা করেছিল দেগঙ্গা ব্লক প্রশাসন। ঘোষণা মাত্রই এলাকার জমা পলিথিন কুড়িয়ে বিডিও অফিসে দিয়ে ত্রিপল সংগ্রহ শুরু করলেন দেগঙ্গার বাসিন্দারা।
গত তিন বছরে দেগঙ্গায় ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সংখ্যা শতাধিক। মজে যাওয়া নর্দমায় পলিথিন, প্লাস্টিক আটকে জমা জলে জন্মানো মশার লার্ভা চিন্তা বাড়িয়েছিল ব্লক প্রশাসনের। তার পরেই পাঁচ কেজি প্লাস্টিকের বিনিময়ে ত্রিপল দেওয়া হবে বলে এলাকায় হোর্ডিং, পোস্টার লাগিয়ে প্রচার শুরু হয়। ঘরে ও দোকানের কাজে প্রয়োজনীয় ত্রিপলের জন্য তাই এখন এলাকা থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করছেন অনেকেই।
বৃহস্পতিবার দেখা গেল ব্লক দফতরের সামনে বস্তা ভর্তি পলিথিন জমা দিয়ে ত্রিপল নিচ্ছেন কামাল সাহাজি, রাজিয়া বিবি, ফারুক হোসেনেরা। তাঁরা জানান, বর্ষায় ত্রিপলের প্রয়োজন হবে। আবার তাঁরাও চান যাতে প্লাস্টিকের কারণে এলাকায় জল জমে মশা না জন্মায়।
সরকারি তথ্যই বলছে, ২০১৭ সালে দেগঙ্গায় ডেঙ্গি ও অজানা জ্বরে মৃত্যু হয়েছিল শতাধিক মানুষের। ২০১৮ সালে প্রকোপ কিছুটা কমে। ২০১৯ সালে আবার আক্রান্তের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়ায়। মৃত্যুও হয় পাঁচ জনের। নুরনগরে জ্বর, ডেঙ্গির প্রকোপ ছিল ভয়াবহ। সেখানে এলাকার নর্দমাগুলি পলিথিনে ভরে বুজে গিয়েছিল। পরিষ্কার জলে জন্মাচ্ছিল মশার লার্ভা। এ দিন সেখান থেকেই পলিথিন জমা করে ত্রিপল নিয়ে যান সাবিক হক, আশাদুল মণ্ডলেরা। আশাদুল বলেন, ‘‘ত্রিপল তো মিলবেই। কিন্তু আমরা চাই এলাকা প্লাস্টিক মুক্ত করে মশার হাত থেকে বাঁচতে।’’
এ দিন দেগঙ্গার বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, ‘‘যত্রতত্র ফেলে দেওয়ায় প্লাস্টিক নিকাশি নালায় জমছে। প্রশাসন প্লাস্টিক পরিষ্কার করলেও ফের তা নালায় ফেলা হচ্ছে। নর্দমা বুজে জল জমে মশা জন্মাচ্ছে। প্রতিটি এলাকা এ ভাবে প্লাস্টিক জমা দিলেই দূষণ ঠেকানো যাবে। রোগ, ব্যাধিও কমবে।’’