সল্টলেক এখন কার্যত দ্বিতীয় কলকাতা। ফুটপাথ দখল করে থাকা বিভিন্ন খাবারের দোকানের বাড়বাড়ন্ত দেখে এমন তকমাই দিচ্ছেন বাসিন্দারা।
কিন্তু ওই সব খাবারের দোকানের জল কোথা থেকে আসছে? গুণমান কেমন? কতটা স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাবার? নিয়মিত নজরদারি ও পরীক্ষা না করলে এই সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়।
কিন্তু সেই নজরদারি কিংবা পরীক্ষা করবে কারা? বাসিন্দাদের প্রশ্ন, কোনও ঘটনা ঘটলে তবেই কি প্রশাসনের হুঁশ ফিরবে? তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন দোকানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দোকানে যে জল ব্যবহার করা হচ্ছে তা পান করার যোগ্য নয়। পাশাপাশি তেল থেকে শুরু করে রান্নার অন্য উপকরণের গুণমান নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। চোখের সামনে এত কিছু ঘটে চললেও প্রশাসন নিষ্ক্রিয়।
অভিযোগ, বিধাননগর পুরসভায় ফুড ইন্সপেক্টর বলে কোনও পদই নেই। খাদ্যের গুণমান পরীক্ষা কিংবা ভেজাল ধরার জন্য কোনও নজরদারি নেই। নেই কোনও ল্যাবেরটরিও। পুরসভা সূত্রে খবর, খাদ্যে ভেজাল ধরার কোনও পরিকাঠামোই এখন বিধাননগর পুরসভায় নেই। বস্তুত, কলকাতা পুরসভার সাহায্যেই আপাতত সেই কাজ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুরকর্তারা।
সম্প্রতি সল্টলেক ও বাগুইআটিতে প্লাস্টিক ডিমের সন্ধানে বাজারে হানা দেয় বিধাননগর পুরসভা। একই ভাবে মঙ্গলবারেও বাগুইআটি ও সল্টলেকের বাজারে প্লাস্টিক ডিমের সন্ধানে হানা দিয়েছে পুর প্রশাসন। ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছ থেকে ডিমও সংগ্রহ করা হয়েছে।
কিন্তু কাদের নিয়ে, কী ভাবে অভিযান চালাচ্ছে বিধাননগর পুর প্রশাসন? পুরসভা সূত্রে খবর, মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় ছাড়া সেই দলে বেশ কয়েক জন আধিকারিক রয়েছেন। কিন্তু খাদ্যে ভেজাল ধরার বিশেষজ্ঞ কোথায়?
এই প্রসঙ্গে প্রণয়বাবু জানান, ফুড ইনস্পেক্টর বলে এখন কোনও পদ নেই। সাবেক বাম পুরবোর্ড দায়িত্বে থাকার সময়ে এক ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেছিল। অন্য কাজের পাশাপাশি খাদ্যের গুণমান পরীক্ষার কাজও সেই ব্যক্তি করতেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলরদের একাংশ।
প্রণয়বাবু জানান, ল্যাবরেটরি তৈরির জন্য জমি প্রয়োজন। খাদ্যে ভেজাল ধরার জন্য একটি ভিজিল্যান্স কমিটি তৈরিরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ওই পদ তৈরি এবং সেই পদে লোক নিয়োগ করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাব। পাশাপাশি জমির খোঁজ চলছে। জমি পেলেই ল্যাবরেটরি তৈরি করা সম্ভব হবে। আপাতত কলকাতা পুরসভার সহযোগিতায় এই কাজ চালানো হচ্ছে।’’