জরিমানা আদায়ের ‘নজিরবিহীন’ নির্দেশ

পরিবেশ আদালতের নির্দেশ, ১০ লক্ষের উপরে জনসংখ্যা হলে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

বারবার বলা সত্ত্বেও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বায়ুদূষণ-সহ একাধিক বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি রাজ্য সরকার। তাই আবারও জরিমানার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এ বার তার ধরন আলাদা। এত দিন শুধুই দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ার জন্য এককালীন জরিমানা করা হচ্ছিল। স্থির হয়েছে, চলতি বছর এপ্রিলের আগে রাজ্যের পুর এলাকাগুলিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন বাস্তবায়িত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। না হলে প্রতি মাসে জরিমানা আদায় করার কথা বলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। যাকে ‘নজিরবিহীন’ বলছেন পরিবেশকর্মীদের একটি বড় অংশ।

Advertisement

পরিবেশ আদালতের নির্দেশ, ১০ লক্ষের উপরে জনসংখ্যা হলে সংশ্লিষ্ট পুরসভাকে মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। ৫-১০ লক্ষ জনসংখ্যার পুর এলাকাকে প্রতি মাসে পাঁচ লক্ষ এবং বাকি পুরসভারগুলির ক্ষেত্রে মাসে এক লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। যদি সংশ্লিষ্ট পুরসভার আর্থিক ক্ষমতা না থাকে, তা হলে রাজ্য সরকারকেই জরিমানা দিতে হবে। কলকাতা-সহ রাজ্যের সমস্ত পুরসভার ক্ষেত্রেই এই জরিমানার নিয়মটি প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে আদালত। শুধু তা-ই নয়, এক মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে মুখ্যসচিবের অধীনে একটি ‘পরিবেশ সেল’ তৈরি করতে হবে, যা দূষণ সংক্রান্ত সব বিষয়ে নজর রাখবে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তার রিপোর্ট কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে জমা দেবে।

শুধুমাত্র পুর কর্তৃপক্ষই নন, পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের জন্য যদি কোনও আধিকারিকের গাফিলতি থাকে, তা হলে সে কথাও নথিভুক্ত করতে হবে। ফলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের পদোন্নতিতে সেই গাফিলতি প্রভাব ফেলবে বলেই জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তাদের একটি অংশ। প্লাস্টিক, বায়ো-কেমিক্যাল এবং নির্মাণ সংক্রান্ত বর্জ্য সংগ্রহ এবং তা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার উপরেও গুরুত্ব দিয়েছে আদালত। রাজ্যের নদী ও জলাশয়গুলিকে বাঁচাতে বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Advertisement

এত দিন ধরে দূষণ রোধে একাধিক রায় দিয়েছিল আদালত। তার পরেও সেই নির্দেশ না মানায় এমন কড়া পদক্ষেপ করেছে আদালত। এমনটাই মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। যেমন, বর্জ্য ফেলার ক্ষেত্রে কলকাতার ধাপা এলাকার ধারণ ক্ষমতা বহু দিন আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। তার পরেও সেখানে জঞ্জাল ফেলার কাজ চলছে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘এমন রায় নজিরবিহীন। পরিবেশের বিষয়ে করছি-করব শুনতে চাইছে না আদালত।’’ পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলছেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায় মানার ব্যাপারে আমরা সব রকম চেষ্টা করব। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement