—ফাইল ছবি
বাড়িতে নতুন সদস্য আসার আনন্দটুকু উবে গিয়েছে আহিরিটোলার ভেঙে পড়া বাড়ির সদস্যদের। মনে ভিড় করে রয়েছে সদ্য মৃত শিশুটির স্মৃতি। বুধবার আহিরিটোলায় বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছে বছর আড়াইয়ের শ্রীজিতা ঘোড়ুইয়ের। আহত হন শ্রীজিতার মা, অন্তঃসত্ত্বা গঙ্গাও। বড় মেয়ের মৃত্যুদিনেই গঙ্গা জন্ম দিয়েছেন শিশু কন্যার। কিন্তু নতুন মায়ের শরীর ও মনের কথা ভেবে বাড়ির সদস্যরা মেয়ে শ্রীজিতার খবর জানাতে চাইছেন না মাকে। গঙ্গার বাবা মদন গড়াই জানালেন, ওঁকে বলার মতো সাহস নেই তাঁদের। কে জানাবে এই খবর?
রাতভর বৃষ্টিতে বুধবার সকালে আহিরিটোলা স্ট্রিটে ভেঙে পড়ে পুরনো ওই বাড়ি। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যান বাড়ির সদস্যরা। ক্ষতি হয় পাশের বাড়িটিরও। দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দল এসে ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার করে। কিন্তু একটি বড় চাঙড়ের তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হয় শ্রীজিতার। মৃত্যু হয় শ্রীজিতার দিদিমা চম্পা গড়াইয়েরও। মদন জানালেন, সামনের গলিতেই গঙ্গার শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের দেখভাল করার জন্যই গঙ্গাকে বাপের বাড়িতে থাকতে বলেছিলেন। শ্রীজিতাও মায়ের সঙ্গেই থাকত।
দুর্ঘটনায় আহত হন গঙ্গার স্বামী সুশান্ত ঘোড়ুই। বুধবার প্রাথমিক চিকিৎসার পর মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার আবার অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ছোট নাতনিকে সামনাসামনি দেখার ইচ্ছা থাকলেও, হাসপাতালে দেখতে যেতে পারছেন না, বলে জানালেন সুশান্তর মা লতিকা। বললেন,‘‘গঙ্গা জানে আমি আহত বড় নাতনির দেখভালের জন্য মেডিক্যাল কলেজে রয়েছি। আমার দিদি হাসপাতালে গঙ্গার সঙ্গে ছিল। ওঁকে বড় মেয়ের শরীরের কথা জিজ্ঞাসা করছিল। আমি গেলেও তো একই কথা জিজ্ঞাসা করবে।’’
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে গঙ্গার, পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। সদ্যোজাত রয়েছে হাসপাতালের নার্সারিতে। মা এবং সন্তানের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানালেন গঙ্গার শ্বাশুড়ি।