তৈরি করা হচ্ছে নতুন স্মার্ট কার্ড, যাতে মাইক্রোচিপ এবং কিউআর কোডে ধরা থাকবে যাবতীয় তথ্য। প্রতীকী ছবি।
প্যান কার্ড কিংবা আধার কার্ডের মতো অনলাইনে আবেদন করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া পূরণ করলে এ বার থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট পৌঁছে যাবে বাড়িতে। দু’টির ক্ষেত্রেই এটিএম কার্ডের ধাঁচে তৈরি করা হচ্ছে নতুন স্মার্ট কার্ড, যাতে মাইক্রোচিপ এবং কিউআর কোডে ধরা থাকবে যাবতীয় তথ্য। ফলে, নথি বহন করার কোনও রকম ঝক্কি আর পোহাতে হবে না। বৃহস্পতিবার বেলতলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে এই পরিষেবার সূচনা করেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
জানা গিয়েছে, বেলতলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকেই কেন্দ্রীয় ভাবে একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ওই কার্ড ডাকযোগে বাড়ি বাড়ি পাঠানো হবে। তার জন্য ডাক বিভাগের সঙ্গে নির্দিষ্ট চুক্তিও করা হয়েছে। স্মার্ট কার্ড ডাকযোগে পাঠানোর পরে সেটির অবস্থান জানার ব্যবস্থাও থাকছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, দিনে সর্বাধিক ১০ হাজার পর্যন্ত কার্ড পাঠানোর পরিকাঠামো এখন তৈরি আছে।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনেই এই কার্ড চালু হল রাজ্যে। অনলাইনে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার পরে আবেদনকারীর মোবাইলে সফ্ট কপি পাঠানোর ব্যবস্থাও রয়েছে। চালকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই স্মার্ট কার্ডের লাইসেন্স বাড়িতে পৌঁছে যাবে। একই ভাবে গাড়ি কেনার পরে এত দিন কাগজের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট এবং আলাদা করে ব্লু বুক দেওয়া হত। নয়া ব্যবস্থায় যাবতীয় তথ্য স্মার্ট কার্ডের চিপ এবং কিউআর কোডে ধরা থাকবে। জানা গিয়েছে, দু’ধরনের কার্ডের ক্ষেত্রেই আগের চেয়ে ২০০ টাকা করে অতিরিক্ত খরচ হবে। সেই সঙ্গে পরিষেবা কর হিসাবে আরও কিছু টাকা দিতে হবে।
নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন অথবা নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার পরে পরিবহণ দফতর তার অনুমোদন দিলে এই সংক্রান্ত তথ্য ওই বেসরকারি সংস্থার কাছে পৌঁছে যাবে। তার পরে স্মার্ট কার্ড তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হবে। খুব অল্প সময়ে কার্ড হাতে মিলবে বলে খবর। যাঁদের কাছে পুরনো ধাঁচের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট আছে, তাঁরাও নির্দিষ্ট ফি দিয়ে নতুন কার্ড করানোর সুযোগ পাবেন। কার্ডের কিউআর কোড মোবাইলে স্ক্যান করলে ট্র্যাফিক সার্জেন্ট থেকে গাড়ির মালিক, সকলেই প্রয়োজনে যাবতীয় তথ্য দেখতে পারবেন। তবে, ওই কার্ডের মাইক্রো চিপের তথ্য পড়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক যন্ত্র কলকাতা পুলিশের কাছে এখনও নেই। তাই কিছু সমস্যার আশঙ্কা থাকছে।
এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি ও অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এত দিন রাস্তায় পুলিশ কাগজের লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট পরীক্ষা করার সময়ে চালকদের নানা কারণে অসুবিধার মুখে পড়তে হত। এ বার তা দূর হবে বলে আশা করছি।’’