সঞ্জীব ও লাবণী গোস্বামী।
জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুর-শাশুড়ি গিয়েছিলেন ‘জামাই আদর’ করতে নোদাখালিতে জামাইয়ের বাড়ি। কিন্তু জুটল উপহার নয়, জামাইয়ের হুমকি, মারধর। এমন কি বিষয়টি গড়াল থানা পর্যন্ত। হরিদেবপুর থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন শাশুড়ি।
২০১৮ সালে নোদাখালির বাসিন্দা সঞ্জীব গোস্বামীর সঙ্গে বিয়ে হয় হরিদেবপুরের লাবণীর অধিকারীর। লাবণী জানায়, সঞ্জীব পুলিশে এএসআই পদে কর্মরত। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে লাবণীর মা-বাবা ঊষা ও খোকন অধিকারী জামাইকে আসার জন্য নিমন্ত্রণ করেন। কিন্তু কাজ থাকায় আসতে পারবেন না বলে জানান সঞ্জীব।
জামাইষষ্ঠীর দিন সকালে মেয়ে ও নাতির সঙ্গে দেখা করতে নোদাখালি চলে আসেন লাবণীর বাবা-মা। সেখানেই তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি চলে এসে তাঁরা বিকালের দিকে হরিদেবপুর থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান।
লাবণীর অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে তাঁকে মারধর এবং মানসিক অত্যাচার করত সঞ্জীব। হরিদেবপুরে নিজের বাড়ি থাকলেও লর্ড সিন্হা রোডে তাঁর বদলি হলে, সঞ্জীব হরিদেবপুরে লাবণীর বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। লাবণীর দিদি শ্রাবণীর অভিযোগ, সেখানেও লাবণীর উপর নিয়মিত অত্যাচার করতেন সঞ্জীব। বিয়ের সময় এক লক্ষ টাকা যৌতুক হিসাবে তাঁকে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন শ্রাবণী। এর পর আরও টাকার দাবি করে লাবণীর উপর অত্যাচার করতেন তিনি। পুলিশে কাজ করেন বলে সঞ্জীব হুমকি দিতেন, ‘‘অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হবে না।’’
লাবণীর মা ঊষা বলেন, ‘‘মেয়েকে কিছু করে ফেলতে পারে বলে আমি ভয়ে থাকতাম। জামাইষষ্ঠীর দিন আসতে পারবে না শুনে নাতি ও মেয়েকে দেখতে আমি ওদের বাড়ি যাই। এ ভাবে হঠাৎ করে চলে যাওয়াতে বোঝহয় ওদের রাগ হয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাড়িতে প্রথম দিকে ভাল ব্যবহার করলেও হঠাৎ মেয়ের শ্বশুর, আমাকে এবং ওর বাবাকে ধাক্কা দিতে শুরু করে। ঘুষি মারে। জামাইও আমাদের ভয় দেখায়।’’ এই ঘটনার পর তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
লাবণী বলেন,‘‘ আমি ওদের হুমকি, ভয় দেখানোর কিছু কথা ফোনে রেকর্ড করে রেখেছিলাম। মারধরের সময় সেই ফোনটি ওরা ভেঙে দেয়। আমার বাচ্চার আঘাত লেগেছে। আমার সামনে মা-বাবাকে মেরেছে।’’
অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করছে। এই অভিযোগ নিয়ে সঞ্জীবের বাড়ির লোকেদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ