প্রতিকি অনশনে বসেছে "২০১৬ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ" র শিক্ষকরা l ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে ধর্নায় বসে থাকা ‘২০১৬ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর তরফে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ এ বার অনশনের পথে হাঁটলেন। সোমবার থেকে জনা কুড়ি শিক্ষক-শিক্ষিকা এই অনশন শুরু করেছেন, যা চলবে আজ, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত। ২০১৬ সালের ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়া সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার। অনশনকারী শিক্ষকেরা জানান, শীর্ষ আদালত তাঁদের পক্ষে রায় না দিলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে এবং অনশন দীর্ঘায়িত হবে।
২০১৬ সালের প্যানেল থেকে অযোগ্যদের বাদ দেওয়ার দাবিতে গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে শুরু হয় ‘২০১৬ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর ধর্না। সেখানে বসেই এ দিন বাংলার এক শিক্ষক ধীতীশ মণ্ডল বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের শুনানিতে এসএসসি-র আইনজীবীরা আমাদের পক্ষে কতটা সওয়াল করেন, দেখব। নেতিবাচক ফল হলে আমরা এই আন্দোলন থেকে উঠছি না। নেতিবাচক কিছু হলে বুঝতে হবে, ষড়যন্ত্রের শিকার হচ্ছি।’’
তবে সুপ্রিম কোর্টের শুনানির আগেই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন 'যোগ্য' শিক্ষকেরা। তাঁদের দাবি, পরীক্ষা দিয়ে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন। অযোগ্যদের সঙ্গে তাঁদের গুলিয়ে ফেললে তা মানবাধিকারের পরিপন্থী। রাষ্ট্রপতির কাছেও মেল করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়েও নিজেদের বক্তব্য জানানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে শিক্ষকদের একটি দল দিল্লি পৌঁছেছে। তাঁদের এক জন মেহবুব মণ্ডল বলেন, ‘‘ছ’বছর স্কুলে চাকরি করার পরে চাকরি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কেন এমন হবে? সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নবম, দশমের ৮.৫০ শতাংশ এবং একাদশ, দ্বাদশের ১৪.৪৭ শতাংশ অযোগ্য। এই সামান্য সংখ্যক অযোগ্যদের জন্য কেন পুরো প্যানেল বাতিল করা হবে? যাঁরা যোগ্য, তাঁরা কী দোষ করেছেন?’’ এ দিনও ওয়াই চ্যানেলে স্লোগান ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। প্রশ্ন ওঠে, এসএসসি যোগ্য-অযোগ্যের মধ্যে বিভেদ করতে না পারলে তার জন্য তাঁরা কেন রাস্তায় বসে থাকবেন? যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন বলে এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করবে না।
ইতিমধ্যেই ওই ধর্নারত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বেশ কিছু শিক্ষক সংগঠন। সেই সংগঠনগুলির সদস্যেরাও ওয়াই চ্যানেলের ধর্না মঞ্চে এসে সহমর্মিতা জানিয়েছেন। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির শিক্ষকেরা মিছিল করে ওয়াই চ্যানেলে আসেন। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির বক্তব্য, পুরো প্যানেল বাতিল হলে বহু যোগ্য ও প্রতিভাবান শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী চাকরি হারাবেন। যা কাম্য নয়।