শ্রীতমা মণ্ডল
সদ্যই দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। তীব্র শোকের মধ্যেও এক মাত্র সন্তানের চোখ দান করলেন বাবা-মা। রবিবারই হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর দশেকের শ্রীতমা মণ্ডলের। তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন বাবা-মা। তার মধ্যেও গবেষণার জন্য মেয়ের চোখ দানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাবা নারায়ণ মণ্ডলকে সাধুবাদ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
দীর্ঘ দিন ধরেই ব্রেন স্টেম গ্লিওমা রোগে ভুগছিল শ্রীতমা। স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলো করার ইচ্ছে থাকলেও পেরে উঠত না সে। ভিন্ রাজ্যে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েও লাভ হয়নি। শেষমেশ রবিবার ভোরে শ্রীতমার মৃত্যু হয়। তার পরেই মেয়ের অঙ্গ দানের জন্য ‘গণদর্পণ’-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন পেশায় শিক্ষক নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘‘বহু চিকিৎসা করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। ওর অনেক শখ ছিল। সে সব তো আর পূরণ হল না। আমরা চাই গবেষণা চলুক। যাতে আর কোনও বাবা, মাকে এ ভাবে সন্তানহারা না হতে হয়।’’
একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে গবেষণার জন্য শ্রীতমার কর্নিয়া দান করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের চেয়ারম্যান দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এত ছোট বয়সে চোখ দান সাধারণত হয় না। অনেক পরিবারই রাজি হয় না। সেই দিক থেকে শ্রীতমার পরিবার অত্যন্ত সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ব্যবহারিক দিক থেকে বলতে গেলে, বাচ্চাদের কর্নিয়ার সেল কাউন্ট ভাল থাকে বলে এ ক্ষেত্রে সফলতার হারও বেশি হয়।’’ ‘গণদর্পণ’-এর পক্ষ থেকে শ্যামল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘১৯৯৮ সালে ছ’বছরের এক বালকের দেহ দান করা হয়েছিল। এ বার ১০ বছরের বালিকার দেহ দান হল।’’