গত কয়েক বছর ধরে বড়দিন এবং বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আলোর সাজে সেজে উঠছে গোটা পার্ক স্ট্রিট। —ফাইল চিত্র।
দুর্গাপুজোর সময়ে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় শহরে নিরাপত্তা আরও কড়া করেছিল লালবাজার। এ বার বড়দিন এবং বর্ষবরণের উৎসবকে কেন্দ্র করে পার্ক স্ট্রিটে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে চাইছে লালবাজার। তাই গত বছরের তুলনায় এ বার ওই এলাকায় পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবছেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা। প্রাথমিক ভাবে তার তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। আগামী ১৮-২০ ডিসেম্বরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী উৎসবের সূচনা করবেন ধরে নিয়েই সমস্ত পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এ বছর দুর্গাপুজোয় শহরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় উৎসব চলাকালীনই কড়া সতর্কতা জারি করেছিল লালবাজার। ‘মাল্টি এজেন্সি সেন্টার’ বা ম্যাক-এর তরফে পাঠানো সেই সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেই লালবাজারের তরফে কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানাকে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে দুর্গাপুজো বা পরে দীপাবলির সময়ে এই ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটলেও বর্ষবরণের সময়ে উৎসবমুখর শহরে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ লালবাজারের পুলিশকর্তারা। তাই বছর শেষের ক’দিন অন্যান্য বারের তুলনায় নজরদারি বাড়াতে চাইছেন তাঁরা।
গত কয়েক বছর ধরে বড়দিন এবং বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে আলোর সাজে সেজে উঠছে গোটা পার্ক স্ট্রিট। সে সময়ে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমে ওই এলাকায়। এ বছর ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে পার্ক স্ট্রিটে বড়দিন বা বর্ষবরণের উৎসবের সূচনা হতে পারে বলে মনে করছে লালবাজার। এই উৎসবকে ঘিরে এখনও পর্যন্ত তেমন আশঙ্কাজনক সতর্কবার্তা না এলেও কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ পুলিশকর্তারা। সেই কারণেই ওই সময়ে পার্ক স্ট্রিটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর ভাবনা বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, উৎসবকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পার্ক স্ট্রিট এলাকার একাধিক হোটেলে নজরদারি শুরু হয়েছে। যে হেতু ওই এলাকার হোটেলগুলিতে ভিন্ রাজ্যের পাশাপাশি বহু বিদেশি অতিথি এসে ওঠেন, তাই ওই সময়ে কারা ওই হোটেলগুলিতে উঠছেন, তা খতিয়ে দেখতে আলাদা ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বছর শেষের কয়েক দিনের জন্য কেউ ওই এলাকার হোটেলে অগ্রিম ঘর নিয়ে রাখলে সেই তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিভিশনের এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে হেতু পার্ক স্ট্রিট-সহ গোটা এলাকায় একাধিক হাই সিকিয়োরিটি জ়োন রয়েছে, তাই ওই এলাকা ঘিরে সারা বছর আলাদা পরিকল্পনা থাকে। তবে উৎসবের কয়েক দিন এই দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। যে হেতু প্রচুর মানুষ এখানে আসেন, তাই নজরদারির জন্য বিকল্প পরিকল্পনা করতেই হয়।’’
লালবাজার সূত্রের খবর, গত বছর বড়দিন এবং বর্ষবরণের সময়ে গোটা এলাকাকে ১১টি জ়োনে ভাগ করা হয়েছিল। মোতায়েন করা হয়েছিল প্রায় তিন হাজার পুলিশ। ছিল কুইক রেসপন্স টিম, উইনার্স বাহিনীও। দায়িত্বে ছিলেন ১০ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক। এ বার সেই নিরাপত্তার বহর আরও বাড়াতে চাইছে লালবাজার। এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বছর দুর্গাপুজোতেও রাস্তায় বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল। বড়দিন এবং বর্ষবরণ ঘিরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থার একই রকম পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর।’’