প্রতীকী ছবি
ক্রেতা-সুরক্ষায় নতুন আইন কার্যকর হতে চলেছে কাল, সোমবার থেকে। রাজ্য ক্রেতা-সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই আইন বলবৎ হওয়ার পরে সাধারণ মানুষ নানা ভাবে উপকৃত হবেন।
১৯৮৬ সালের ক্রেতা-সুরক্ষা আইন পরিবর্তন করে গত বছরের অগস্টে সংসদে পাশ হয়েছিল নতুন ক্রেতা-সুরক্ষা আইন। ওই আইন যাতে অবিলম্বে কার্যকর করা হয়, তার জন্য এ রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে একাধিক বার চিঠি লিখেছিলেন। অবশেষে কেন্দ্রের তরফে সমস্ত রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরকে দিন দুয়েক আগে চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, কাল, সোমবার থেকে নতুন আইন কার্যকর হতে চলেছে।
এত দিন প্রতিটি জেলায় ক্রেতা-সুরক্ষা আদালতে মামলা করলে মামলাকারী সর্বাধিক ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারতেন। এ বার নতুন আইনের জোরে অভিযোগকারী সর্বাধিক এক কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন।
একই ভাবে এত দিন রাজ্য ক্রেতা-সুরক্ষা আদালতে সর্বাধিক এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা লড়া যেত। পরিবর্তিত আইনের ফলে মামলাকারী দশ কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন।
শুধু তা-ই নয়, মামলাকারী কোথায় মামলা লড়তে চান, এ বার থেকে তা ঠিক করার স্বাধীনতাও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে। ধরা যাক, মামলাকারী কোনও সামগ্রী কলকাতা থেকে কিনেছেন। কিন্তু তিনি উত্তরবঙ্গের মালদহের বাসিন্দা। ওই সামগ্রী কিনে তিনি প্রতারিত হয়ে থাকলে পুরনো আইনে মামলাকারীকে কলকাতায় এসে মামলা লড়তে হত। কিন্তু নতুন আইনের ক্ষেত্রে মামলাকারী মালদহ জেলার ক্রেতা-সুরক্ষা আদালতেই মামলা লড়তে পারবেন।
ক্রেতা-সুরক্ষা আদালতে দীর্ঘ দিন ধরে মামলা লড়ছেন আইনজীবী বরুণ প্রসাদ। তাঁর কথায়, ‘‘নতুন আইন নানা দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত, সংবাদমাধ্যমে দেখানো ‘বিভ্রান্তিকর’ বিজ্ঞাপনের জালে সাধারণ মানুষ প্রচুর ঠকছেন। নতুন আইন অনুযায়ী, যে সংস্থা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিদান তো রয়েছেই, পাশাপাশি বিজ্ঞাপনে যদি কোনও খ্যাতনামা মানুষকে দেখা যায়, তা হলে তাতে তাঁরও দায়বদ্ধতা থাকবে।’’
তবে নতুন আইন চালু হলেও তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয়ে ক্রেতা-সুরক্ষা দফতরেরই কর্মী ও আধিকারিকদের একাংশ। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাজ্যের প্রতিটি জেলার ক্রেতা-সুরক্ষা অফিস, ডিরেক্টরেট ও কমিশনে প্রচুর পদ খালি হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই সমস্ত পদে নিয়োগ না-হলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।’’ এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘শীঘ্রই শূন্য পদে নিয়োগ শুরু হবে।’’
নয়া আইন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন আইনে ক্রেতাদের সুরক্ষার বিষয়ে বেশি করে জোর দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকে দফতর বা কমিশনে অভিযোগ জানাতে এসে যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেই বিষয়টি পরিষ্কার করে বলা আছে।’’