প্রতীকী ছবি।
ভাই পিক্কালি নন, আসল লক্ষ্য ছিলেন তাঁর দিদি ঊষা রানি। মাস ছয়েক আগে থেকেই অপহরণকারীরা নজর রাখতে শুরু করেছিল সোনারপুরের দক্ষিণ জগদ্দল এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলার উপরে। এমনই দাবি তদন্তকারীদের। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে গিয়ে গত শনিবার অপহরণকারীদের কবল থেকে ঊষা রানির ভাই পিক্কালি আমিনকে উদ্ধার করে সোনারপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতার হয় চার অপহরণকারী। পুলিশি হেফাজতে নিয়ে সেই চার জনকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। তাদের নাম রাই শিরনু, অনিল গাদি, রাজ ডেঙ্গলা ও ইলমাচেলি শিরনু। তারা পেশাদার অপহরণকারী। তদন্তকারীরা জানান, ঊষা রানি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় নিয়োগের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন এবং দু’পক্ষের থেকেই কমিশন নেন। নিয়োগ-পিছু কমিশন বাবদ ৭০-৮০ হাজার টাকা আয় করেন।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় প্রচুর নিয়োগ শুরু হয়েছে। ঊষা রানিও বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় অসংখ্য নিয়োগ করিয়েছেন। সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েক জন বাসিন্দাকে সাব-এজেন্ট হিসেবে কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, রাজু বেঙ্কটেশ নামে বিশাখাপত্তনমের এক সাব-এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পরেই অপহরণকারীরা ঊষা রানির উপরে নজর রাখতে শুরু করে।
গত ৮ জুন অপহরণকারীরা রাজুকে সঙ্গে নিয়ে হাওড়ার গোলাবাড়ির একটি হোটেলে ওঠে। নিয়োগের কমিশন বাবদ পাওনা সাত লক্ষ টাকা দেওয়ার অছিলায় ঊষা রানিকে হোটেলে ডাকে রাজু। ঊষা রানি নিজে না গিয়ে ভাইকে পাঠাচ্ছেন বলে জানান। এর পরেই ভাইকে অপহরণের ছক কষা হয়। ঊষা রানির ভাই পিক্কালি হাওড়ার হোটেলে যাওয়ার পরে রাজু নানা রকম খাবার নিয়ে আসে। তার পরে অপহরণকারীরা একে একে ওই ঘরে হাজির হয়। পিক্কালির মুখে জোর করে ঘুমের ওষুধ ঢুকিয়ে দেয় তারা। তার পরে বেহুঁশ পিক্কালিকে গাড়িতে তুলে অন্ধ্রপ্রদেশ নিয়ে যায়। ১১ জুন বিশাখাপত্তনমে পৌঁছে ঊষা রানিকে ফোন করে ৭০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। টাকা না পেলে ভাইকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়।
১২ জুন সোনারপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন ঊষা রানি। পরের দিনই সোনারপুর থানার পুলিশকর্মীদের একটি দল অন্ধ্রপ্রদেশ রওনা দেয়। বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা এক অটোচালকের মাধ্যমে অপহরণকারীদের পুলিশ জানায়, হাওয়ালা মারফত টাকা পাঠানো হবে। সেই টোপ দিয়েই তাদের ধরা হয়। পিক্কালিকেও উদ্ধার করা হয়।