শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
বিধায়ক হয়েছেন মাস দেড়েক। তার মধ্যেই এলাকায় চলা তোলাবাজি ও দাদাগিরি নিয়ে দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন খড়দহের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বা কর্মসূচির আয়োজনে অন্য রকম কাজকর্ম বন্ধ করতেও দল এবং স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।
বিধানসভা ভোটের সময়ে দলের প্রার্থী কাজল সিংহ মারা যাওয়ায় অক্টোবরের শেষে উপনির্বাচন হয় খড়দহে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে সেই ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জেতেন মন্ত্রী শোভনদেব। কলকাতা থেকে নির্বাচিত শোভনদেব উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহে সরে গেলেও সংগঠন বা রাজনীতির কাজে খুব বেশি সমস্যা হয়নি প্রবীণ এই রাজনীতিকের। তবে নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার মাসখানেকের মধ্যে স্থানীয় কিছু বিষয় নিয়ে বিরক্ত হয়েই দলের কাছে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সে সব নিয়েই সম্প্রতি তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক জেলা দমদম-ব্যারাকপুরের সভাপতি পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন শোভনদেব। জানা গিয়েছে, ভোট শেষ হওয়ার পর থেকে স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে তোলাবাজির একাধিক অভিযোগ পেয়েছেন মন্ত্রী। অবিলম্বে এ ব্যাপারে সাংগঠনিক স্তরে পদক্ষেপ করার জন্য পার্থকে অনুরোধও করেছেন তিনি।
সম্প্রতি খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মুড়াগাছা অঞ্চলে একটি মেলার উদ্বোধনে গিয়েও একগুচ্ছ অভিযোগ পান
শোভনদেব। তার মধ্যে মেলায় ‘জুয়া খেলা’ নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাঁর কাছে। দলীয় সূত্রের খবর, মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই এই ধরনের অসামাজিক কাজে নিজের আপত্তির কথা জানিয়ে দেন মন্ত্রী। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় পুলিশকর্তাদের তিনি বলে দিয়েছেন, আয়োজক যে-ই হোন না কেন, এই ধরনের কোনও কাজ হচ্ছে জানতে পারলে তা বন্ধ করা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকে। জানা গিয়েছে, ওই মেলার
আয়োজনের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূলের কয়েক জন জড়িত। সে কথা মাথায় রেখে দলের অন্দরেও কড়া হতে বলেছেন তিনি।
রাসবিহারী কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক শোভনদেব এ বার প্রথমে দাঁড়িয়েছিলেন ভবানীপুরে। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীকে সেই আসন ছেড়ে দিয়ে তিনি প্রার্থী হন খড়দহে। বিধায়ক হওয়ার পরেই তাঁর যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি দলের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। শোভনদেব বলেন, ‘‘এই রকম কিছু গুরুতর অভিযোগ আমার কানে এসেছে। কারা এ সব কাজ করছে, সেটা বড় কথা নয়। জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমার দায়িত্ব, এমন কিছু শুনলে তা নানা স্তরে দেখা এবং অভিযোগ সত্যি হলে তা বন্ধ করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এ সবে প্রশ্রয় দেবে না।’’