মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত নন। কোনও দুর্নীতি সহ্যও করবেন না। গাছের চারা কেনা নিয়ে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে শুক্রবার এমনই জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এ দিন ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের শেষে তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। যত ক্ষণ হেড অব দ্য ইনস্টিটিউশন রয়েছি, তত ক্ষণ দুর্নীতি সহ্য করব না।’’ সে কারণে পুরসভা কত গাছের চারা কিনেছে, আগামী সপ্তাহের ‘টক টু মেয়র’-এ সেই সংক্রান্ত শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কথা ঘোষণা করেন ফিরহাদ। মেয়রের কথায়, ‘‘দু’ভাবে গাছের চারা কেনা হয়। একটা বরোভিত্তিক, অন্যটা উদ্যান দফতর কেনে। উদ্যান দফতর ও বরোর তরফে কত গাছের চারা কেনা হয়েছে, কোথায় বসানো হয়েছে, এই সমস্ত হিসাব জনসমক্ষে পেশ করব।’’
প্রসঙ্গত, তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইনে পুরসভার কাছে আমপান ও ইয়াসের জেরে এবং তা বাদ দিয়েও ২০১৮ সাল থেকে শহরে ওয়ার্ডভিত্তিক উপড়ে পড়া গাছ ও তার ক্ষতিপূরণে রোপণ করা গাছের চারার সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুর উদ্যান ও গালিচা দফতর (পার্কস অ্যান্ড স্কোয়ার্স) জানায়, এই সংক্রান্ত কোনও তথ্যই পুরসভার কাছে নেই! প্রতি বছর কোটি টাকা খরচ করে গাছের চারা কেনা হলেও সে সংক্রান্ত তথ্য খোদ পুর কর্তৃপক্ষের কাছে না থাকাকে যথেষ্ট অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন অনেকে। আর সেই সূত্রেই সবুজায়ন প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির প্রসঙ্গ উঠেছে।
এ দিকে, মেয়রের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পুর প্রশাসনের একাংশে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি উদ্যান দফতরের গাফিলতি পরোক্ষে স্বীকার করলেন মেয়র? এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘মেয়রের বক্তব্যে স্পষ্ট, পুরপ্রধান হিসেবে আর্থিক দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার দায় তিনি নেবেন না। তার মানে বল এ বার উদ্যান দফতরের কোর্টে!’’
যদিও আর এক অংশের বক্তব্য, মেয়র বরো অফিস ও উদ্যান দফতরের মাধ্যমে, অর্থাৎ যে দু’ভাবে পুরসভা চারা কেনে, তার সম্মিলিত হিসাবের কথা বলেছেন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘গাছের চারার হিসাব না থাকা নিঃসন্দেহে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অস্বস্তির কারণ। নাগরিকদের টাকায় কেনা গাছের চারা সংক্রান্ত তথ্য জানার অধিকার তাঁদের রয়েছে, মেয়র তা স্বীকার করেছেন।’’